দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে,
নিচের ▶ বাটনে ক্লিক করুন৩২-১ : আলিফ - লাম - মীম,
৩২-২ : এই কিতাব জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট হইতে অবতীর্ণ, ইহাতে কোন সন্দেহ নাই।
৩২-৩ : তবে কি উহারা বলে, ‘ইহা সে নিজে রচনা করিয়াছে?’ না, ইহা তোমার প্রতিপালক হইতে আগত সত্য, যাহাতে তুমি এমন এক সম্প্রদায়কে সতর্ক করিতে পার, যাহাদের নিকট তোমার পূর্বে কোন সতর্ককারী আসে নাই, হয়ত উহারা সৎপথে চলিবে।
৩২-৪ : আল্লাহ্, যিনি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও উহাদের অন্তর্বর্তী সমস্ত কিছু সৃষ্টি করিয়াছেন ছয় দিনে। অতঃপর তিনি ‘আরশে সমাসীন হন। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক নাই এবং সুপারিশকারীও নাই ; তবু কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করিবে না ?
৩২-৫ : তিনি আকাশ হইতে পৃথিবী পর্যন্ত সমুদয় বিষয় পরিচালনা করেন, অতঃপর একদিন সমস্ত কিছুই তাঁহার সমীপে সমুত্থিত হইবে - যে দিনের পরিমাপ হইবে তোমাদের হিসাবে সহস্র বৎসর।
৩২-৬ : তিনিই অদৃশ্য ও দৃশ্য সম্বন্ধে পরিজ্ঞাত, পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু,
৩২-৭ : যিনি তাহার প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সৃজন করিয়াছেন উত্তমরূপে, এবং কর্দম হইতে মানব সৃষ্টির সূচনা করিয়াছেন।
৩২-৮ : অতঃপর তিনি তাহার বংশ উৎপন্ন করেন তুচ্ছ তরল পদার্থের নির্যাস হইতে।
৩২-৯ : পরে তিনি উহাকে করিয়াছেন সুঠাম এবং উহাতে ফুঁকিয়া দিয়াছেন তাঁহার রূহ্ হইতে এবং তোমাদেরকে দিয়াছেন কর্ণ, চক্ষু ও অন্তঃকরণ, তোমরা অতি সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
৩২-১০ : উহারা বলে, ‘আমরা মৃত্তিকায় পর্যবসিত হইলেও কি আমাদেরকে আবার নূতন করিয়া সৃষ্টি করা হইবে?’ বরং উহারা উহাদের প্রতিপালকের সাক্ষাৎ অস্বীকার করে।
৩২-১১ : বল, ‘তোমাদের জন্য নিযুক্ত মৃত্যুর ফিরিশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করিবে। অবশেষে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট প্রত্যানীত হইবে।’
৩২-১২ : হায়, তুমি যদি দেখিতে ! যখন অপরাধীরা তাহাদের প্রতিপালকের সম্মুখে অধোবদন হইয়া বলিবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক ! আমরা প্রত্যক্ষ করিলাম ও শ্রবণ করিলাম, এখন তুমি আমাদেরকে পুনরায় প্রেরণ কর, আমরা সৎকর্ম করিব, আমরা তো দৃঢ় বিশ্বাসী।’
৩২-১৩ : আমি ইচ্ছা করিলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সৎপথে পরিচালিত করিতাম ; কিন্তু আমার এই কথা অবশ্যই সত্য : আমি নিশ্চয়ই আল জিন ও মানুষ উভয় দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করিব।
৩২-১৪ : সুতরাং ‘শাস্তি আস্বাদন কর, কারণ আজিকার এই সাক্ষাতের কথা তোমরা বিস্মৃত হইয়াছিলে। আমিও তোমাদেরকে বিস্মৃত হইয়াছি, তোমরা যাহা করিতে তজ্জন্য তোমরা স্থায়ী শাস্তি ভোগ করিতে থাক।’
৩২-১৫ : কেবল তাহারাই আমার নিদর্শনাবলী বিশ্বাস করে যাহারা উহার দ্বারা উপদিষ্ট হইলে সিজ্দায় লুটাইয়া পড়ে এবং তাহাদের প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে আর তাহারা অহংকার করে না।
৩২-১৬ : তাহারা শয্যা ত্যাগ করিয়া তাহাদের প্রতিপালককে ডাকে আশায় ও আশংকায় এবং আমি তাহাদেরকে যে রিযিক দান করিয়াছি উহা হইতে তাহারা ব্যয় করে।
৩২-১৭ : কেহই জানে না তাহাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর কী লুক্কায়িত রাখা হইয়াছে তাহাদের কৃতকর্মের পুরস্কারস্বরূপ।
৩২-১৮ : তবে যে ব্যক্তি মু’মিন, সে কি পাপাচারীর ন্যায়? উহারা সমান নহে।
৩২-১৯ : যাহারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে তাহাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ তাহাদের আপ্যায়নের জন্য তাহাদের স্থায়ী বাসস্থান হইবে জান্নাত।
৩২-২০ : এবং যাহারা পাপাচার করিয়াছে তাহাদের বাসস্থান হইবে জাহান্নাম ; যখনই উহারা জাহান্নাম হইতে বাহির হইতে চাহিবে তখনই উহাদেরকে ফিরাইয়া দেওয়া হইবে উহাতে এবং উহাদেরকে বলা হইবে, ‘যে অগ্নি - শাস্তিকে তোমরা মিথ্যা বলিতে, উহা আস্বাদন কর।’
৩২-২১ : গুরু শাস্তির পূর্বে উহাদেরকে আমি অবশ্যই লঘু শাস্তি আস্বাদন করাইব, যাহাতে উহারা ফিরিয়া আসে।
৩২-২২ : যে ব্যক্তি তাহার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী দ্বারা উপদিষ্ট হইয়া তাহা হইতে মুখ ফিরায় তাহার অপেক্ষা অধিক জালিম আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদেরকে শাস্তি দিয়া থাকি।
৩২-২৩ : আমি তো মূসাকে কিতাব দিয়াছিলাম, অতএব তুমি তাহার সাক্ষাৎ সম্বন্ধে সন্দেহ করিও না, আমি ইহাকে বনী ইসরাঈলের জন্য পথনির্দেশক করিয়াছিলাম।
৩২-২৪ : আর আমি উহাদের মধ্য হইতে নেতা মনোনীত করিয়াছিলাম, যাহারা আমার নির্দেশ অনুসারে পথ প্রদর্শন করিত, যেহেতু উহারা ধৈর্য ধারণ করিয়াছিল। আর উহারা ছিল আমার নিদর্শনাবলীতে দৃঢ় বিশ্বাসী।
৩২-২৫ : উহারা যে বিষয়ে মতবিরোধ করিতেছে তোমার প্রতিপালকই কিয়ামতের দিন তাহাদের মধ্যে উহার ফয়সালা করিয়া দিবেন।
৩২-২৬ : ইহাও কি তাহাদেরকে পথ প্রদর্শন করিল না যে, আমি তো উহাদের পূর্বে ধ্বংস করিয়াছি কত মানবগোষ্ঠী - যাহাদের বাসভূমিতে ইহারা বিচরণ করিয়া থাকে? ইহাতে অবশ্যই নিদর্শন রহিয়াছে ; তবুও কি ইহারা শুনিবে না?
৩২-২৭ : উহারা কি লক্ষ্য করে না, আমি ঊষর ভূমির উপর পানি প্রবাহিত করিয়া উহার সাহায্যে উদ্গত করি শস্য, যাহা হইতে আহার্য গ্রহণ করে উহাদের চতুষ্পদ জন্তু এবং উহারাও ? উহারা কি তবুও লক্ষ্য করিবে না ?
৩২-২৮ : উহারা জিজ্ঞাসা করে, ‘তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে বল, কখন হইবে এই ফয়সালা?’
৩২-২৯ : বল, ‘ফয়সালার দিনে কাফিরদের ঈমান আনয়ন উহাদের কোন কাজে আসিবে না এবং উহাদেরকে অবকাশও দেওয়া হইবে না।’
৩২-৩০ : অতএব তুমি উহাদেরকে অগ্রাহ্য কর এবং অপেক্ষা কর, উহারাও অপেক্ষা করিতেছে।