بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
নিচের ▶ বাটনে ক্লিক করুনদয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহ্র নামে,
الٓرٰ كِتٰبٌ اُحۡكِمَتۡ اٰيٰـتُهٗ ثُمَّ فُصِّلَتۡ مِنۡ لَّدُنۡ حَكِيۡمٍ خَبِيۡرٍۙ ﴿۱﴾
১১-১ : আলিফ - লাম - রা, এই কিতাব প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞের নিকট হইতে; ইহার আয়াতসমূহ সুস্পষ্ট, সুবিন্যস্ত ও পরে বিশদভাবে বিবৃত যে,
اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّا اللّٰهَ ؕ اِنَّنِىۡ لَـكُمۡ مِّنۡهُ نَذِيۡرٌ وَّبَشِيۡرٌ ۙ ﴿۲﴾
১১-২ : তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যের ‘ইবাদত করিবে না, অবশ্যই আমি তাঁহার পক্ষ হইতে তোমাদের জন্য সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা।
وَّاَنِ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّكُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَيۡهِ يُمَتِّعۡكُمۡ مَّتَاعًا حَسَنًا اِلٰٓى اَجَلٍ مُّسَمًّى وَ يُؤۡتِ كُلَّ ذِىۡ فَضۡلٍ فَضۡلَهٗ ؕ وَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنِّىۡۤ اَخَافُ عَلَيۡكُمۡ عَذَابَ يَوۡمٍ كَبِيۡرٍ﴿۳﴾
১১-৩ : আরও যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাঁহার দিকে প্রত্যাবর্তন কর, তিনি তোমাদেরকে এক নির্দিষ্ট কালের জন্য উত্তম জীবন উপভোগ করিতে দিবেন এবং তিনি প্রত্যেক গুণীজনকে তাহার প্রাপ্য মর্যাদা দান করিবেন। যদি তোমরা মুখ ফিরাইয়া নাও তবে আমি তোমাদের জন্য আশংকা করি মহাদিবসের শাস্তির।
اِلَى اللّٰهِ مَرۡجِعُكُمۡۚ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ قَدِيۡرٌ﴿۴﴾
১১-৪ : আল্লাহ্রই নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন এবং তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
اَلَاۤ اِنَّهُمۡ يَثۡنُوۡنَ صُدُوۡرَهُمۡ لِيَسۡتَخۡفُوۡا مِنۡهُؕ اَلَا حِيۡنَ يَسۡتَغۡشُوۡنَ ثِيَابَهُمۡۙ يَعۡلَمُ مَا يُسِرُّوۡنَ وَمَا يُعۡلِنُوۡنَۚ اِنَّهٗ عَلِيۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ﴿۵﴾
১১-৫ : সাবধান! নিশ্চয়ই উহারা তাঁহার নিকট গোপন রাখিবার জন্য উহাদের বক্ষ দ্বিভাঁজ করে। সাবধান! উহারা যখন নিজেদেরকে বস্ত্রে আচ্ছাদিত করে তখন উহারা যাহা গোপন করে ও প্রকাশ করে, তিনি তাহা জানেন। অন্তরে যাহা আছে, নিশ্চয়ই তিনি তাহা সবিশেষ অবহিত।
وَمَا مِنۡ دَآ بَّةٍ فِى الۡاَرۡضِ اِلَّا عَلَى اللّٰهِ رِزۡقُهَا وَ يَعۡلَمُ مُسۡتَقَرَّهَا وَمُسۡتَوۡدَعَهَاؕ كُلٌّ فِىۡ كِتٰبٍ مُّبِيۡنٍ﴿۶﴾
১১-৬ : ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ্রই। তিনি উহাদের স্থায়ী ও অস্থায়ী অবস্থিতি সম্বন্ধে অবহিত; সুস্পষ্ট কিতাবে সব কিছুই আছে।
وَ هُوَ الَّذِىۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ فِىۡ سِتَّةِ اَ يَّامٍ وَّكَانَ عَرۡشُهٗ عَلَى الۡمَآءِ لِيَبۡلُوَكُمۡ اَيُّكُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ وَلَٮِٕنۡ قُلۡتَ اِنَّكُمۡ مَّبۡعُوۡثُوۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِ الۡمَوۡتِ لَيَـقُوۡلَنَّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡۤا اِنۡ هٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّبِيۡنٌ﴿۷﴾
১১-৭ : আর তিনিই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন, তখন তাঁহার আরশ ছিল পানির উপর, তোমাদের মধ্যে কে কর্মে শ্রেষ্ঠ তাহা পরীক্ষা করিবার জন্য। তুমি যদি বল, ‘মৃত্যুর পর তোমরা অবশ্যই উত্থিত হইবে,’ কাফিররা নিশ্চয়ই বলিবে, ‘ইহা তো সুস্পষ্ট জাদু।’
وَلَٮِٕنۡ اَخَّرۡنَا عَنۡهُمُ الۡعَذَابَ اِلٰٓى اُمَّةٍ مَّعۡدُوۡدَةٍ لَّيَـقُوۡلُنَّ مَا يَحۡبِسُهٗؕ اَلَا يَوۡمَ يَاۡتِيۡهِمۡ لَـيۡسَ مَصۡرُوۡفًا عَنۡهُمۡ وَحَاقَ بِهِمۡ مَّا كَانُوۡا بِهٖ يَسۡتَهۡزِءُوۡنَ﴿۸﴾
১১-৮ : নির্দিষ্ট কালের জন্য আমি যদি উহাদের হইতে শাস্তি স্থগিত রাখি তবে উহারা নিশ্চয় বলিবে, ‘কিসে উহা নিবারণ করিতেছে ?’ সাবধান! যে দিন উহাদের নিকট ইহা আসিবে সেদিন উহাদের নিকট হইতে উহা নিবৃত্ত করা হইবে না এবং যাহা লইয়া উহারা ঠাট্টা - বিদ্রূপ করে তাহা উহাদেরকে পরিবেষ্টন করিবে।
وَلَٮِٕنۡ اَذَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ مِنَّا رَحۡمَةً ثُمَّ نَزَعۡنٰهَا مِنۡهُۚ اِنَّهٗ لَيَـــُٔوۡسٌ كَفُوۡرٌ﴿۹﴾
১১-৯ : যদি আমি মানুষকে আমার নিকট হইতে অনুগ্রহ আস্বাদন করাই ও পরে তাহার নিকট হইতে উহা প্রত্যাহার করি তখন সে অবশ্যই হতাশ ও অকৃতজ্ঞ হইবে।
وَلَٮِٕنۡ اَذَقۡنٰهُ نَـعۡمَآءَ بَعۡدَ ضَرَّآءَ مَسَّتۡهُ لَيَـقُوۡلَنَّ ذَهَبَ السَّيِّاٰتُ عَنِّىۡ ؕ اِنَّهٗ لَـفَرِحٌ فَخُوۡرٌۙ﴿۱۰﴾
১১-১০ : আর যদি দুঃখ - দৈন্য স্পর্শ করিবার পর আমি তাহাকে সুখ - সম্পদ আস্বাদন করাই তখন সে অবশ্যই বলিবে, ‘আমার বিপদ - আপদ কাটিয়া গিয়াছে’, আর সে হয় উৎফুল্ল ও অহংকারী।
اِلَّا الَّذِيۡنَ صَبَرُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِؕ اُولٰٓٮِٕكَ لَهُمۡ مَّغۡفِرَةٌ وَّاَجۡرٌ كَبِيۡرٌ﴿۱۱﴾
১১-১১ : কিন্তু যাহারা ধৈর্যশীল ও সৎকর্মপরায়ণ তাহাদেরই জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
فَلَعَلَّكَ تَارِكٌۢ بَعۡضَ مَا يُوۡحٰٓى اِلَيۡكَ وَضَآٮِٕقٌ ۢ بِهٖ صَدۡرُكَ اَنۡ يَّقُوۡلُوۡا لَوۡلَاۤ اُنۡزِلَ عَلَيۡهِ كَنۡزٌ اَوۡ جَآءَ مَعَهٗ مَلَكٌ ؕ اِنَّمَاۤ اَنۡتَ نَذِيۡرٌ ؕ وَاللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ وَّكِيۡلٌ ؕ﴿۱۲﴾
১১-১২ : তবে কি তোমার প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহার কিছু তুমি বর্জন করিবে এবং ইহাতে তোমার মন সংকুচিত হইবে এইজন্য যে, তাহারা বলে, ‘তাহার নিকট ধনভাণ্ডার প্রেরিত হয় না কেন অথবা তাহার সঙ্গে ফিরিশতা আসে না কেন ?’ তুমি তো কেবল সতর্ককারী এবং আল্লাহ্ সর্ববিষয়ের কর্মবিধায়ক।
اَمۡ يَقُوۡلُوۡنَ افۡتَـرٰٮهُ ؕ قُلۡ فَاۡتُوۡا بِعَشۡرِ سُوَرٍ مِّثۡلِهٖ مُفۡتَرَيٰتٍ وَّ ادۡعُوۡا مَنِ اسۡتَطَعۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ اِنۡ كُنۡتُمۡ صٰدِقِيۡنَ﴿۱۳﴾
১১-১৩ : তাহারা কি বলে, ‘সে ইহা নিজে রচনা করিয়াছে ?’ বল, ‘তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে তোমরা ইহার অনুরূপ দশটি স্বরচিত সূরা আনয়ন কর এবং আল্লাহ্ ব্যতীত অপর যাহাকে পার, ডাকিয়া নাও।’
فَاِلَّمۡ يَسۡتَجِيۡبُوۡا لَـكُمۡ فَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّمَاۤ اُنۡزِلَ بِعِلۡمِ اللّٰهِ وَاَنۡ لَّاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۚ فَهَلۡ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ﴿۱۴﴾
১১-১৪ : যদি তাহারা তোমাদের আহ্বানে সাড়া না দেয় তবে জানিয়া রাখ, ইহা তো আল্লাহ্র ইল্ম মুতাবিক অবতীর্ণ এবং তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নাই। তাহা হইলে তোমরা আত্মসমর্পণকারী হইবে কি ?
مَنۡ كَانَ يُرِيۡدُ الۡحَيٰوةَ الدُّنۡيَا وَ زِيۡنَتَهَا نُوَفِّ اِلَيۡهِمۡ اَعۡمَالَهُمۡ فِيۡهَا وَهُمۡ فِيۡهَا لَا يُبۡخَسُوۡنَ﴿۱۵﴾
১১-১৫ : যে কেহ পার্থিব জীবন ও উহার শোভা কামনা করে, দুনিয়ায় আমি উহাদের কর্মের পূর্ণফল দান করি এবং সেখানে তাহাদেরকে কম দেওয়া হইবে না।
اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ لَـيۡسَ لَهُمۡ فِىۡ الۡاٰخِرَةِ اِلَّا النَّارُ ۖ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوۡا فِيۡهَا وَبٰطِلٌ مَّا كَانُوۡا يَعۡمَلُوۡنَ﴿۱۶﴾
১১-১৬ : উহাদের জন্য আখিরাতে দোযখ ব্যতীত অন্য কিছুই নাই এবং উহারা যাহা করে আখিরাতে তাহা নিষ্ফল হইবে এবং উহারা যাহা করিয়া থাকে তাহা নিরর্থক।
اَفَمَنۡ كَانَ عَلٰى بَيِّنَةٍ مِّنۡ رَّبِّهٖ وَيَتۡلُوۡهُ شَاهِدٌ مِّنۡهُ وَمِنۡ قَبۡلِهٖ كِتٰبُ مُوۡسٰٓى اِمَامًا وَّرَحۡمَةً ؕ اُولٰٓٮِٕكَ يُؤۡمِنُوۡنَ بِهٖ ؕ وَمَنۡ يَّكۡفُرۡ بِهٖ مِنَ الۡاَحۡزَابِ فَالنَّارُ مَوۡعِدُهٗ ۚ فَلَا تَكُ فِىۡ مِرۡيَةٍ مِّنۡهُ اِنَّهُ الۡحَـقُّ مِنۡ رَّبِّكَ وَلٰـكِنَّ اَكۡثَرَ النَّاسِ لَا يُؤۡمِنُوۡنَ﴿۱۷﴾
১১-১৭ : তাহারা কি উহাদের সমতুল্য যাহারা প্রতিষ্ঠিত উহাদের প্রতিপালক - প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণের উপর, যাহার অনুসরণ করে তাঁহার প্রেরিত সাক্ষী এবং যাহার পূর্বে ছিল মূসার কিতাব আদর্শ ও অনুগ্রহস্বরূপ ? উহারাই ইহাতে বিশ্বাসী। অন্যান্য দলের যাহারা ইহাকে অস্বীকার করে, দোযখই তাহাদের প্রতিশ্রুত স্থান। সুতরাং তুমি ইহাতে সন্দিগ্ধ হইও না। ইহা তো তোমার প্রতিপালক - প্রেরিত সত্য, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করে না।
وَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَـرٰى عَلَى اللّٰهِ كَذِبًا ؕ اُولٰٓٮِٕكَ يُعۡرَضُوۡنَ عَلٰى رَبِّهِمۡ وَ يَقُوۡلُ الۡاَشۡهَادُ هٰٓؤُلَاۤءِ الَّذِيۡنَ كَذَبُوۡا عَلٰى رَبِّهِمۡ ۚ اَلَا لَـعۡنَةُ اللّٰهِ عَلَى الظّٰلِمِيۡنَۙ ﴿۱۸﴾
১১-১৮ : যাহারা আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে তাহাদের অপেক্ষা অধিক জালিম আর কে ? উহাদেরকে উপস্থিত করা হইবে উহাদের প্রতিপালকের সম্মুখে এবং সাক্ষিগণ বলিবে, ‘ইহারাই ইহাদের প্রতিপালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করিয়াছিল।’ সাবধান ! আল্লাহ্র লা‘নত জালিমদের উপর,
الَّذِيۡنَ يَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِيۡلِ اللّٰهِ وَيَبۡغُوۡنَهَا عِوَجًا ؕ وَهُمۡ بِالۡاٰخِرَةِ هُمۡ كٰفِرُوۡنَ﴿۱۹﴾
১১-১৯ : যাহারা আল্লাহ্র পথে বাধা দেয় এবং উহাতে বক্রতা অনুসন্ধান করে; এবং ইহারাই আখিরাত প্রত্যাখ্যান করে।
اُولٰٓٮِٕكَ لَمۡ يَكُوۡنُوۡا مُعۡجِزِيۡنَ فِى الۡاَرۡضِ وَمَا كَانَ لَهُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مِنۡ اَوۡلِيَآءَ ۘ يُضٰعَفُ لَهُمُ الۡعَذَابُ ؕ مَا كَانُوۡا يَسۡتَطِيۡعُوۡنَ السَّمۡعَ وَمَا كَانُوۡا يُبۡصِرُوۡنَ﴿۲۰﴾
১১-২০ : উহারা পৃথিবীতে আল্লাহ্কে অপারগ করিতে পারিত না এবং আল্লাহ্ ব্যতীত উহাদের অপর কোন অভিভাবক ছিল না; উহাদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হইবে; উহাদের শুনিবার সামর্থ্যও ছিল না এবং উহারা দেখিতও না।
اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَهُمۡ وَضَلَّ عَنۡهُمۡ مَّا كَانُوۡا يَفۡتَرُوۡنَ﴿۲۱﴾
১১-২১ : উহারা নিজেদেরই ক্ষতি করিল এবং উহারা যে অলীক কল্পনা করিত তাহা উহাদের নিকট হইতে উধাও হইয়া গেল।
لَا جَرَمَ اَ نَّهُمۡ فِى الۡاٰخِرَةِ هُمُ الۡاَخۡسَرُوۡنَ ﴿۲۲﴾
১১-২২ : নিঃসন্দেহে উহারাই আখিরাতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত।
اِنَّ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَاَخۡبَـتُوۡۤا اِلٰى رَبِّهِمۡۙ اُولٰٓٮِٕكَ اَصۡحٰبُ الۡجَـنَّةِؕ هُمۡ فِيۡهَا خٰلِدُوۡنَ﴿۲۳﴾
১১-২৩ : যাহারা মু’মিন, সৎকর্মপরায়ণ এবং তাহাদের প্রতিপালকের প্রতি বিনয়াবনত, তাহারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে।
مَثَلُ الۡفَرِيۡقَيۡنِ كَالۡاَعۡمٰى وَالۡاَصَمِّ وَالۡبَـصِيۡرِ وَالسَّمِيۡعِ ؕ هَلۡ يَسۡتَوِيٰنِ مَثَلًا ؕ اَفَلَا تَذَكَّرُوۡنَ﴿۲۴﴾
১১-২৪ : দল দুইটির উপমা অন্ধ ও বধিরের এবং চক্ষুষ্মান ও শ্রবণ শক্তিসম্পন্নের ন্যায়, তুলনায় এই দুই কি সমান ? তবুও কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করিবে না ?
وَلَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا نُوۡحًا اِلٰى قَوۡمِهٖۤ اِنِّىۡ لَـكُمۡ نَذِيۡرٌ مُّبِيۡنٌۙ﴿۲۵﴾
১১-২৫ : আমি তো সূরা নূহকে তাহার সম্প্রদায়ের নিকট পাঠাইয়াছিলাম। সে বলিয়াছিল, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের জন্য প্রকাশ্য সতর্ককারী,
اَنۡ لَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّا اللّٰهَؕ اِنِّىۡۤ اَخَافُ عَلَيۡكُمۡ عَذَابَ يَوۡمٍ اَلِيۡمٍ﴿۲۶﴾
১১-২৬ : যেন তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অপর কিছুর ‘ইবাদত না কর; আমি তো তোমাদের জন্য এক মর্মন্তুদ দিবসের শাস্তি আশংকা করি।’
فَقَالَ الۡمَلَاُ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِهٖ مَا نَرٰٮكَ اِلَّا بَشَرًا مِّثۡلَنَا وَمَا نَرٰٮكَ اتَّبَعَكَ اِلَّا الَّذِيۡنَ هُمۡ اَرَاذِلُــنَا بَادِىَ الرَّاۡىِۚ وَمَا نَرٰى لَـكُمۡ عَلَيۡنَا مِنۡ فَضۡلٍۢ بَلۡ نَظُنُّكُمۡ كٰذِبِيۡنَ﴿۲۷﴾
১১-২৭ : তাহার সম্প্রদায়ের প্রধানেরা, যাহারা ছিল কাফির তাহারা বলিল, ‘আমরা তোমাকে তো আমাদের মত মানুষ ব্যতীত কিছু দেখিতেছি না; আমরা তো দেখিতেছি, তোমার অনুসরণ করিতেছে তাহারাই, যাহারা আমাদের মধ্যে বাহ্য দৃষ্টিতেই অধম এবং আমরা আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব দেখিতেছি না; বরং আমরা তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করি।’
قَالَ يٰقَوۡمِ اَرَءَيۡتُمْ اِنۡ كُنۡتُ عَلٰى بَيِّنَةٍ مِّنۡ رَّبِّىۡ وَاٰتٰٮنِىۡ رَحۡمَةً مِّنۡ عِنۡدِهٖ فَعُمِّيَتۡ عَلَيۡكُمۡؕ اَنُلۡزِمُكُمُوۡهَا وَاَنۡـتُمۡ لَـهَا كٰرِهُوۡنَ﴿۲۸﴾
১১-২৮ : সে বলিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আমাকে বল, আমি যদি আমার প্রতিপালক প্রেরিত স্পষ্ট নিদর্শনে প্রতিষ্ঠিত থাকি এবং তিনি যদি আমাকে তাঁহার নিজ অনুগ্রহ হইতে দান করিয়া থাকেন, আর ইহা তোমাদের নিকট গোপন রাখা হইয়াছে; আমি কি এই বিষয়ে তোমাদেরকে বাধ্য করিতে পারি, যখন তোমরা ইহা অপছন্দকর ?
وَيٰقَوۡمِ لَاۤ اَسۡـــَٔلُكُمۡ عَلَيۡهِ مَالًا ؕاِنۡ اَجۡرِىَ اِلَّا عَلَى اللّٰهِ وَمَاۤ اَنَا بِطَارِدِ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا ؕ اِنَّهُمۡ مُّلٰقُوۡا رَبِّهِمۡ وَلٰـكِنِّىۡۤ اَرٰٮكُمۡ قَوۡمًا تَجۡهَلُوۡنَ﴿۲۹﴾
১১-২৯ : ‘হে আমার সম্প্রদায় ! ইহার পরিবর্তে আমি তোমাদের নিকট ধনসম্পদ যাচ্ঞা করি না। আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহ্রই নিকট এবং মু’মিনদেরকে তাড়াইয়া দেওয়া আমার কাজ নয়; তাহারা নিশ্চিতভাবে তাহাদের প্রতিপালকের সাক্ষাৎ লাভ করিবে। কিন্তু আমি তো দেখিতেছি তোমরা এক অজ্ঞ সম্প্রদায়।
وَيٰقَوۡمِ مَنۡ يَّـنۡصُرُنِىۡ مِنَ اللّٰهِ اِنۡ طَرَدتُّهُمۡؕ اَفَلَا تَذَكَّرُوۡنَ﴿۳۰﴾
১১-৩০ : ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমি যদি তাহাদেরকে তাড়াইয়া দেই, তবে আল্লাহ্ হইতে আমাকে কে রক্ষা করিবে ? তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করিবে না ?
وَلَاۤ اَقُوۡلُ لَـكُمۡ عِنۡدِىۡ خَزَآٮِٕنُ اللّٰهِ وَلَاۤ اَعۡلَمُ الۡغَيۡبَ وَلَاۤ اَقُوۡلُ اِنِّىۡ مَلَكٌ وَّلَاۤ اَقُوۡلُ لِلَّذِيۡنَ تَزۡدَرِىۡۤ اَعۡيُنُكُمۡ لَنۡ يُّؤۡتِيَهُمُ اللّٰهُ خَيۡرًا ؕ اَللّٰهُ اَعۡلَمُ بِمَا فِىۡۤ اَنۡفُسِهِمۡ ۖۚ اِنِّىۡۤ اِذًا لَّمِنَ الظّٰلِمِيۡنَ﴿۳۱﴾
১১-৩১ : ‘আমি তোমাদেরকে বলি না, ‘আমার নিকট আল্লাহ্র ধনভাণ্ডার আছে,’ আর না অদৃশ্য সম্বন্ধে আমি অবগত এবং আমি ইহাও বলি না যে, আমি ফিরিশ্তা। তোমাদের দৃষ্টিতে যাহারা হেয় তাহাদের সম্বন্ধে আমি বলি না যে, আল্লাহ্ তাহাদেরকে কখনই মঙ্গল দান করিবেন না; তাহাদের অন্তরে যাহা আছে তাহা আল্লাহ্ সম্যক অবগত। তাহা হইলে আমি অবশ্যই জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হইব।’
قَالُوۡا يٰـنُوۡحُ قَدۡ جَادَلۡتَـنَا فَاَكۡثَرۡتَ جِدَالَـنَا فَاۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنۡ كُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِيۡنَ ﴿۳۲﴾
১১-৩২ : তাহারা বলিল, ‘হে সূরা নূহ্ ! তুমি তো আমাদের সঙ্গে বিতণ্ডা করিয়াছ - তুমি বিতণ্ডা করিয়াছ আমাদের সঙ্গে অতি মাত্রায়; সুতরাং তুমি সত্যবাদী হইলে আমাদেরকে যাহার ভয় দেখাইতেছ তাহা আনয়ন কর।’
قَالَ اِنَّمَا يَاۡتِيۡكُمۡ بِهِ اللّٰهُ اِنۡ شَآءَ وَمَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِيۡنَ﴿۳۳﴾
১১-৩৩ : সে বলিল, ‘ইচ্ছা করিলে আল্লাহ্ই উহা তোমাদের নিকট উপস্থিত করিবেন এবং তোমরা উহা ব্যর্থ করিতে পারিবে না।
وَلَا يَنۡفَعُكُمۡ نُصۡحِىۡۤ اِنۡ اَرَدْتُّ اَنۡ اَنۡصَحَ لَكُمۡ اِنۡ كَانَ اللّٰهُ يُرِيۡدُ اَنۡ يُّغۡوِيَكُمۡؕ هُوَ رَبُّكُمۡ وَاِلَيۡهِ تُرۡجَعُوۡنَؕ﴿۳۴﴾
১১-৩৪ : ‘আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিতে চাহিলেও আমার উপদেশ তোমাদের উপকারে আসিবে না, যদি আল্লাহ্ তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করিতে চান। তিনিই তোমাদের প্রতিপালক এবং তাঁহারই নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন।’
اَمۡ يَقُوۡلُوۡنَ افۡتَـرٰٮهُ ؕ قُلۡ اِنِ افۡتَرَيۡتُهٗ فَعَلَىَّ اِجۡرَامِىۡ وَاَنَا بَرِىۡٓءٌ مِّمَّا تُجۡرِمُوۡنَ﴿۳۵﴾
১১-৩৫ : তাহারা কি বলে যে, সে ইহা রচনা করিয়াছে ? বল, ‘আমি যদি ইহা রচনা করিয়া থাকি, তবে আমিই আমার অপরাধের জন্য দায়ী হইব। তোমরা যে অপরাধ করিতেছ তাহা হইতে আমি দায়মুক্ত।’
وَاُوۡحِىَ اِلٰى نُوۡحٍ اَنَّهٗ لَنۡ يُّؤۡمِنَ مِنۡ قَوۡمِكَ اِلَّا مَنۡ قَدۡ اٰمَنَ فَلَا تَبۡتَٮِٕسۡ بِمَا كَانُوۡا يَفۡعَلُوۡنَ ۖ ۚ ﴿۳۶﴾
১১-৩৬ : সূরা নূহের প্রতি প্রত্যাদেশ হইয়াছিল, ‘যাহারা ঈমান আনিয়াছে তাহারা ব্যতীত তোমার সম্প্রদায়ের অন্য কেহ কখনও ঈমান আনিবে না। সুতরাং তাহারা যাহা করে তজ্জন্য তুমি দুঃখিত হইও না।
وَاصۡنَعِ الۡفُلۡكَ بِاَعۡيُنِنَا وَوَحۡيِنَا وَلَا تُخَاطِبۡنِىۡ فِى الَّذِيۡنَ ظَلَمُوۡا ۚ اِنَّهُمۡ مُّغۡرَقُوۡنَ﴿۳۷﴾
১১-৩৭ : ‘তুমি আমার তত্ত্বাবধানে ও আমার প্রত্যাদেশ অনুযায়ী নৌকা নির্মাণ কর এবং যাহারা সীমালংঘন করিয়াছে তাহাদের সম্পর্কে তুমি আমাকে কিছু বলিও না ; তাহারা তো নিমজ্জিত হইবে।’
وَيَصۡنَعُ الۡفُلۡكَ وَكُلَّمَا مَرَّ عَلَيۡهِ مَلَاٌ مِّنۡ قَوۡمِهٖ سَخِرُوۡا مِنۡهُؕ قَالَ اِنۡ تَسۡخَرُوۡا مِنَّا فَاِنَّا نَسۡخَرُ مِنۡكُمۡ كَمَا تَسۡخَرُوۡنَؕ﴿۳۸﴾
১১-৩৮ : সে নৌকা নির্মাণ করিতে লাগিল এবং যখনই তাহার সম্প্রদায়ের প্রধানেরা তাহার নিকট দিয়া যাইত, তাহাকে উপহাস করিত ; সে বলিত, ‘তোমরা যদি আমাকে উপহাস কর তবে আমরাও তোমাদেরকে উপহাস করিব, যেমন তোমরা উপহাস করিতেছ;
فَسَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَۙ مَنۡ يَّاۡتِيۡهِ عَذَابٌ يُّخۡزِيۡهِ وَيَحِلُّ عَلَيۡهِ عَذَابٌ مُّقِيۡمٌ﴿۳۹﴾
১১-৩৯ : ‘এবং তোমরা অচিরে জানিতে পারিবে - কাহার উপর আসিবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আর তাহার উপর আপতিত হইবে স্থায়ী শাস্তি।’
حَتّٰۤى اِذَا جَآءَ اَمۡرُنَا وَفَارَ التَّنُّوۡرُۙ قُلۡنَا احۡمِلۡ فِيۡهَا مِنۡ كُلٍّ زَوۡجَيۡنِ اثۡنَيۡنِ وَاَهۡلَكَ اِلَّا مَنۡ سَبَقَ عَلَيۡهِ الۡقَوۡلُ وَمَنۡ اٰمَنَؕ وَمَاۤ اٰمَنَ مَعَهٗۤ اِلَّا قَلِيۡلٌ﴿۴۰﴾
১১-৪০ : অবশেষে যখন আমার আদেশ আসিল এবং উনুন উথলিয়া উঠিল; আমি বলিলাম, ‘ইহাতে উঠাইয়া নাও প্রত্যেক শ্রেণীর যুগলের দুইটি, যাহাদের বিরুদ্ধে পূর্ব - সিদ্ধান্ত হইয়াছে তাহারা ব্যতীত তোমার পরিবার - পরিজনকে এবং যাহারা ঈমান আনিয়াছে তাহাদেরকে।’ তাহার সঙ্গে ঈমান আনিয়াছিল অল্প কয়েকজন।
وَقَالَ ارۡكَبُوۡا فِيۡهَا بِسۡمِ اللّٰهِ مَجْرٖؔٮٰھَا وَمُرۡسٰٮهَا ؕ اِنَّ رَبِّىۡ لَـغَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ ﴿۴۱﴾
১১-৪১ : সে বলিল, ‘ইহাতে আরোহণ কর, আল্লাহ্র নামে ইহার গতি ও স্থিতি, আমার প্রতিপালক অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
وَهِىَ تَجۡرِىۡ بِهِمۡ فِىۡ مَوۡجٍ كَالۡجِبَالِ وَنَادٰى نُوۡحُ اۨبۡنَهٗ وَكَانَ فِىۡ مَعۡزِلٍ يّٰبُنَىَّ ارۡكَبْ مَّعَنَا وَلَا تَكُنۡ مَّعَ الۡكٰفِرِيۡنَ﴿۴۲﴾
১১-৪২ : পর্বত - প্রমাণ তরঙ্গের মধ্যে ইহা তাহাদেরকে লইয়া বহিয়া চলিল ; সূরা নূহ্ তাহার পুত্রকে - যে পৃথক ছিল, আহ্বান করিয়া বলিল, ‘হে আমার পুত্র! আমাদের সঙ্গে আরোহণ কর এবং কাফিরদের সঙ্গী হইও না।’
قَالَ سَاٰوِىۡۤ اِلٰى جَبَلٍ يَّعۡصِمُنِىۡ مِنَ الۡمَآءِؕ قَالَ لَا عَاصِمَ الۡيَوۡمَ مِنۡ اَمۡرِ اللّٰهِ اِلَّا مَنۡ رَّحِمَۚ وَحَالَ بَيۡنَهُمَا الۡمَوۡجُ فَكَانَ مِنَ الۡمُغۡرَقِيۡنَ﴿۴۳﴾
১১-৪৩ : সে বলিল, ‘আমি এমন এক পর্বতে আশ্রয় লইব যাহা আমাকে প্লাবন হইতে রক্ষা করিবে।’ সে বলিল, ‘আজ আল্লাহ্র হুকুম হইতে রক্ষা করিবার কেহ নাই, তবে যাহাকে আল্লাহ্ দয়া করিবেন সে ব্যতীত।’ ইহার পর তরঙ্গ উহাদেরকে বিচ্ছিন্ন করিয়া দিল এবং সে নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত হইল।
وَقِيۡلَ يٰۤاَرۡضُ ابۡلَعِىۡ مَآءَكِ وَيٰسَمَآءُ اَقۡلِعِىۡ وَغِيۡضَ الۡمَآءُ وَقُضِىَ الۡاَمۡرُ وَاسۡتَوَتۡ عَلَى الۡجُوۡدِىِّ وَقِيۡلَ بُعۡدًا لِّـلۡقَوۡمِ الظّٰلِمِيۡنَ﴿۴۴﴾
১১-৪৪ : ইহার পর বলা হইল, ‘হে পৃথিবী! তুমি তোমার পানি গ্রাস করিয়া নাও এবং হে আকাশ! ক্ষান্ত হও।’ ইহার পর বন্যা প্রশমিত হইল এবং কার্য সমাপ্ত হইল, নৌকা জুদী পর্বতের উপর স্থির হইল এবং বলা হইল, জালিম সম্প্রদায় ধ্বংস হউক।
وَنَادٰى نُوۡحٌ رَّبَّهٗ فَقَالَ رَبِّ اِنَّ ابۡنِىۡ مِنۡ اَهۡلِىۡ وَاِنَّ وَعۡدَكَ الۡحَـقُّ وَاَنۡتَ اَحۡكَمُ الۡحٰكِمِيۡنَ﴿۴۵﴾
১১-৪৫ : সূরা নূহ্ তাহার প্রতিপালককে সম্বোধন করিয়া বলিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার পুত্র আমার পরিবারভুক্ত এবং আপনার প্রতিশ্রুতি সত্য; আর আপনি তো বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিচারক।’
قَالَ يٰـنُوۡحُ اِنَّهٗ لَـيۡسَ مِنۡ اَهۡلِكَ ۚاِنَّهٗ عَمَلٌ غَيۡرُ صَالِحٍ ۖ فَلَا تَسۡــَٔــلۡنِ مَا لَـيۡسَ لَـكَ بِهٖ عِلۡمٌ ؕ اِنِّىۡۤ اَعِظُكَ اَنۡ تَكُوۡنَ مِنَ الۡجٰهِلِيۡنَ﴿۴۶﴾
১১-৪৬ : তিনি বলিলেন, ‘হে সূরা নূহ্! সে তো তোমার পরিবারভুক্ত নয়। সে অবশ্যই অসৎকর্মপরায়ণ। সুতরাং যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই সে বিষয়ে আমাকে অনুরোধ করিও না। আমি তোমাকে উপদেশ দিতেছি, তুমি যেন অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত না হও।’
قَالَ رَبِّ اِنِّىۡۤ اَعُوۡذُ بِكَ اَنۡ اَسۡــَٔلَكَ مَا لَـيۡسَ لِىۡ بِهٖ عِلۡمٌؕ وَاِلَّا تَغۡفِرۡ لِىۡ وَتَرۡحَمۡنِىۡۤ اَكُنۡ مِّنَ الۡخٰسِرِيۡنَ﴿۴۷﴾
১১-৪৭ : সে বলিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নাই, সে বিষয়ে যাহাতে আপনাকে অনুরোধ না করি, এইজন্য আমি আপনার শরণ লইতেছি। আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন এবং আমাকে দয়া না করেন, তবে আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হইব।’
قِيۡلَ يٰـنُوۡحُ اهۡبِطۡ بِسَلٰمٍ مِّنَّا وَبَرَكٰتٍ عَلَيۡكَ وَعَلٰٓى اُمَمٍ مِّمَّنۡ مَّعَكَؕ وَاُمَمٌ سَنُمَتِّعُهُمۡ ثُمَّ يَمَسُّهُمۡ مِّنَّا عَذَابٌ اَلِيۡمٌ﴿۴۸﴾
১১-৪৮ : বলা হইল, ‘হে সূরা নূহ্ ! অবতরণ কর আমার পক্ষ হইতে শান্তি ও কল্যাণসহ এবং তোমার প্রতি ও যে সমস্ত সম্প্রদায় তোমার সঙ্গে আছে তাহাদের প্রতি ; অপর সম্প্রদায়সমূহকে আমি জীবন উপভোগ করিতে দিব, পরে আমা হইতে মর্মন্তুদ শাস্তি উহাদেরকে স্পর্শ করিবে;
تِلۡكَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الۡغَيۡبِ نُوۡحِيۡهَاۤ اِلَيۡكَۚ مَا كُنۡتَ تَعۡلَمُهَاۤ اَنۡتَ وَلَا قَوۡمُكَ مِنۡ قَبۡلِ هٰذَا ۛؕ فَاصۡبِرۡ ۛؕ اِنَّ الۡعَاقِبَةَ لِلۡمُتَّقِيۡنَ﴿۴۹﴾
১১-৪৯ : ‘এই সমস্ত অদৃশ্যলোকের সংবাদ আমি তোমাকে ওহী দ্বারা অবহিত করিতেছি, যাহা ইহার পূর্বে তুমি জানিতে না এবং তোমার সম্প্রদায়ও জানিত না। সুতরাং ধৈর্য ধারণ কর, শুভ পরিণাম মুত্তাকীদেরই জন্য।’
وَاِلٰى عَادٍ اَخَاهُمۡ هُوۡدًا ؕ قَالَ يٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰهَ مَا لَـكُمۡ مِّنۡ اِلٰهٍ غَيۡرُهٗ ؕ اِنۡ اَنۡتُمۡ اِلَّا مُفۡتَرُوۡنَ﴿۵۰﴾
১১-৫০ : আদ জাতির নিকট উহাদের ভ্রাতা হূদকে পাঠাইয়াছিলাম, সে বলিয়াছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ্ নাই। তোমরা তো কেবল মিথ্যা রচনাকারী।
يٰقَوۡمِ لَاۤ اَسۡـــَٔلُكُمۡ عَلَيۡهِ اَجۡرًا ؕ اِنۡ اَجۡرِىَ اِلَّا عَلَى الَّذِىۡ فَطَرَنِىۡ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ﴿۵۱﴾
১১-৫১ : ‘হে আমার সম্প্রদায় ! আমি ইহার পরিবর্তে তোমাদের নিকট পারিশ্রমিক যাচ্ঞা করি না। আমার পারিশ্রমিক আছে তাঁহারই নিকট, যিনি আমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। তোমরা কি তবুও অনুধাবন করিবে না?
وَيٰقَوۡمِ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّكُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَيۡهِ يُرۡسِلِ السَّمَآءَ عَلَيۡكُمۡ مِّدۡرَارًا وَّيَزِدۡكُمۡ قُوَّةً اِلٰى قُوَّتِكُمۡ وَلَا تَتَوَلَّوۡا مُجۡرِمِيۡنَ﴿۵۲﴾
১১-৫২ : ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁহার দিকেই ফিরিয়া আস। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বারি বর্ষণ করিবেন। তিনি তোমাদেরকে আরও শক্তি দিয়া তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করিবেন এবং তোমরা অপরাধী হইয়া মুখ ফিরাইয়া লইও না।’
قَالُوۡا يٰهُوۡدُ مَا جِئۡتَـنَا بِبَيِّنَةٍ وَّمَا نَحۡنُ بِتٰـرِكِىۡۤ اٰلِهَـتِنَا عَنۡ قَوۡلِكَ وَمَا نَحۡنُ لَـكَ بِمُؤۡمِنِيۡنَ﴿۵۳﴾
১১-৫৩ : উহারা বলিল, ‘হে হূদ! তুমি আমাদের নিকট কোন স্পষ্ট প্রমাণ আনয়ন কর নাই, তোমার কথায় আমরা আমাদের উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করিবার নহি এবং আমরা তোমাতে বিশ্বাসী নহি।
اِنۡ نَّقُوۡلُ اِلَّا اعۡتَـرٰٮكَ بَعۡضُ اٰلِهَتِنَا بِسُوۡٓءٍ ؕ قَالَ اِنِّىۡۤ اُشۡهِدُ اللّٰهَ وَاشۡهَدُوۡۤا اَنِّىۡ بَرِىۡٓءٌ مِّمَّا تُشۡرِكُوۡنَ ۙ﴿۵۴﴾
১১-৫৪ : ‘আমরা তো ইহাই বলি, আমাদের উপাস্যদের মধ্যে কেহ তোমাকে অশুভ দ্বারা আবিষ্ট করিয়াছে।’ সে বলিল, ‘আমি তো আল্লাহ্কে সাক্ষী করিতেছি এবং তোমরাও সাক্ষী হও, নিশ্চয়ই আমি তাহা হইতে মুক্ত যাহাকে তোমরা আল্লাহ্র শরীক কর,
مِنۡ دُوۡنِهٖ فَكِيۡدُوۡنِىۡ جَمِيۡعًا ثُمَّ لَا تُنۡظِرُوۡنِ﴿۵۵﴾
১১-৫৫ : ‘আল্লাহ্ ব্যতীত। তোমরা সকলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কর; অতঃপর আমাকে অবকাশ দিও না।
اِنِّىۡ تَوَكَّلۡتُ عَلَى اللّٰهِ رَبِّىۡ وَرَبِّكُمۡ ؕ مَا مِنۡ دَآبَّةٍ اِلَّا هُوَ اٰخِذٌ ۢ بِنَاصِيَتِهَا ؕ اِنَّ رَبِّىۡ عَلٰى صِرَاطٍ مُّسۡتَقِيۡمٍ﴿۵۶﴾
১১-৫৬ : ‘আমি নির্ভর করি আমার ও তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্র উপর; এমন কোন জীবজন্তু নাই, যে তাঁহার পূর্ণ আয়ত্তাধীন নয়; নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক আছেন সরল পথে।
فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَقَدۡ اَبۡلَغۡتُكُمۡ مَّاۤ اُرۡسِلۡتُ بِهٖۤ اِلَيۡكُمۡ ؕ وَيَسۡتَخۡلِفُ رَبِّىۡ قَوۡمًا غَيۡرَكُمۡۚ وَلَا تَضُرُّوۡنَهٗ شَيۡـــًٔا ؕ اِنَّ رَبِّىۡ عَلٰى كُلِّ شَىۡءٍ حَفِيۡظٌ﴿۵۷﴾
১১-৫৭ : ‘অতঃপর তোমরা মুখ ফিরাইয়া লইলেও আমি যাহাসহ তোমাদের নিকট প্রেরিত হইয়াছি, আমি তো তাহা তোমাদের নিকট পৌঁছাইয়া দিয়াছি; এবং আমার প্রতিপালক তোমাদের হইতে ভিন্ন কোন সম্প্রদায়কে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করিবেন এবং তোমরা তাঁহার কোন ক্ষতি সাধন করিতে পারিবে না। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক সমস্ত কিছুর রক্ষণাবেক্ষণকারী।’
وَ لَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّيۡنَا هُوۡدًا وَّالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَهٗ بِرَحۡمَةٍ مِّنَّا ۚ وَ نَجَّيۡنٰهُمۡ مِّنۡ عَذَابٍ غَلِيۡظٍ﴿۵۸﴾
১১-৫৮ : এবং যখন আমার নির্দেশ আসিল তখন আমি হূদ ও তাহার সঙ্গে যাহারা ঈমান আনিয়াছিল তাহাদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করিলাম এবং রক্ষা করিলাম তাহাদেরকে কঠিন শাস্তি হইতে।
وَتِلۡكَ عَادٌ جَحَدُوۡا بِاٰيٰتِ رَبِّهِمۡ وَعَصَوۡا رُسُلَهٗ وَاتَّبَعُوۡۤا اَمۡرَ كُلِّ جَبَّارٍ عَنِيۡدٍ﴿۵۹﴾
১১-৫৯ : এই ‘আদ জাতি তাহাদের প্রতিপালকের নিদর্শন অস্বীকার করিয়াছিল এবং অমান্য করিয়াছিল তাঁহার রাসূলগণকে এবং উহারা প্রত্যেক উদ্ধত স্বৈরাচারীর নির্দেশ অনুসরণ করিয়াছিল।
وَاُتۡبِعُوۡا فِىۡ هٰذِهِ الدُّنۡيَا لَعۡنَةً وَّيَوۡمَ الۡقِيٰمَةِؕ اَلَاۤ اِنَّ عَادًا كَفَرُوۡا رَبَّهُمۡؕ اَلَا بُعۡدًا لِّعَادٍ قَوۡمِ هُوۡدٍ﴿۶۰﴾
১১-৬০ : এই দুনিয়ায় উহাদেরকে করা হইয়াছিল লা‘নতগ্রস্ত এবং লা‘নতগ্রস্ত হইবে উহারা কিয়ামতের দিনেও। জানিয়া রাখ! ‘আদ সম্প্রদায় তো তাহাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করিয়াছিল। জানিয়া রাখ! ধ্বংসই হইল পরিণাম ‘আদের, যাহারা হূদের সম্প্রদায়।
وَاِلٰى ثَمُوۡدَ اَخَاهُمۡ صٰلِحًاۘ قَالَ يٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰهَ مَا لَـكُمۡ مِّنۡ اِلٰهٍ غَيۡرُهٗ ؕ هُوَ اَنۡشَاَكُمۡ مِّنَ الۡاَرۡضِ وَاسۡتَعۡمَرَكُمۡ فِيۡهَا فَاسۡتَغۡفِرُوۡهُ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَيۡهِ ؕ اِنَّ رَبِّىۡ قَرِيۡبٌ مُّجِيۡبٌ﴿۶۱﴾
১১-৬১ : আমি সামূদ জাতির নিকট তাহাদের ভ্রাতা সালিহ্কে পাঠাইয়াছিলাম। সে বলিয়াছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! ‘তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদত কর, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ্ নাই। তিনি তোমাদেরকে মৃত্তিকা হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন এবং উহাতেই তিনি তোমাদেরকে বসবাস করাইয়াছেন। সুতরাং তোমরা তাঁহার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর আর তাঁহার দিকেই প্রত্যাবর্তন কর। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক নিকটে, তিনি আহ্বানে সাড়া দেন।’
قَالُوۡا يٰصٰلِحُ قَدۡ كُنۡتَ فِيۡنَا مَرۡجُوًّا قَبۡلَ هٰذَآ اَتَـنۡهٰٮنَاۤ اَنۡ نَّـعۡبُدَ مَا يَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَا وَاِنَّنَا لَفِىۡ شَكٍّ مِّمَّا تَدۡعُوۡنَاۤ اِلَيۡهِ مُرِيۡبٍ﴿۶۲﴾
১১-৬২ : তাহারা বলিল, ‘হে সালিহ্! ইহার পূর্বে তুমি ছিলে আমাদের আশাস্থল। তুমি কি আমাদেরকে নিষেধ করিতেছ ‘ইবাদত করিতে তাহাদের, যাহাদের ‘ইবাদত করিত আমাদের পিতৃপুরুষেরা? আমরা অবশ্যই বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রহিয়াছি সে বিষয়ে, যাহার প্রতি তুমি আমাদেরকে আহ্বান করিতেছ।’
قَالَ يٰقَوۡمِ اَرَءَيۡتُمۡ اِنۡ كُنۡتُ عَلٰى بَيِّنَةٍ مِّنۡ رَّبِّىۡ وَاٰتٰٮنِىۡ مِنۡهُ رَحۡمَةً فَمَنۡ يَّـنۡصُرُنِىۡ مِنَ اللّٰهِ اِنۡ عَصَيۡتُهٗ فَمَا تَزِيۡدُوۡنَنِىۡ غَيۡرَ تَخۡسِيۡرٍ﴿۶۳﴾
১১-৬৩ : সে বলিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা কি ভাবিয়া দেখিয়াছ, আমি যদি আমার প্রতিপালক - প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত হইয়া থাকি এবং তিনি যদি আমাকে তাঁহার নিজ অনুগ্রহ দান করিয়া থাকেন, তবে আল্লাহ্র শাস্তি হইতে আমাকে কে রক্ষা করিবে, আমি যদি তাঁহার অবাধ্যতা করি? সুতরাং তোমরা তো কেবল আমার ক্ষতিই বাড়াইয়া দিতেছ।
وَيٰقَوۡمِ هٰذِهٖ نَاقَةُ اللّٰهِ لَـكُمۡ اٰيَةً فَذَرُوۡهَا تَاۡكُلۡ فِىۡۤ اَرۡضِ اللّٰهِ وَلَا تَمَسُّوۡهَا بِسُوۡٓءٍ فَيَاۡخُذَكُمۡ عَذَابٌ قَرِيۡبٌ﴿۶۴﴾
১১-৬৪ : ‘হে আমার সম্প্রদায় ! ইহা আল্লাহ্র উষ্ট্রী, তোমাদের জন্য নিদর্শনস্বরূপ। ইহাকে আল্লাহ্র জমিতে চরিয়া খাইতে দাও। ইহাকে কোন কষ্ট দিও না, কষ্ট দিলে আশু শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হইবে।’
فَعَقَرُوۡهَا فَقَالَ تَمَتَّعُوۡا فِىۡ دَارِكُمۡ ثَلٰثَةَ اَ يَّامٍ ؕذٰ لِكَ وَعۡدٌ غَيۡرُ مَكۡذُوۡبٍ﴿۶۵﴾
১১-৬৫ : কিন্তু উহারা উহাকে বধ করিল। অতঃপর সে বলিল, ‘তোমরা তোমাদের গৃহে তিন দিন জীবন উপভোগ করিয়া নাও। ইহা একটি প্রতিশ্রুতি যাহা মিথ্যা হইবার নয়।’
فَلَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّيۡنَا صٰلِحًـا وَّالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَهٗ بِرَحۡمَةٍ مِّنَّا وَمِنۡ خِزۡىِ يَوۡمِٮِٕذٍؕ اِنَّ رَبَّكَ هُوَ الۡقَوِىُّ الۡعَزِيۡزُ﴿۶۶﴾
১১-৬৬ : যখন আমার নির্দেশ আসিল তখন আমি সালিহ্ ও তাঁহার সঙ্গে যাহারা ঈমান আনিয়াছিল তাহাদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করিলাম এবং রক্ষা করিলাম সেই দিনের লাঞ্ছনা হইতে। তোমার প্রতিপালক তো মহাশক্তিমান, পরাক্রমশালী।
وَاَخَذَ الَّذِيۡنَ ظَلَمُوا الصَّيۡحَةُ فَاَصۡبَحُوۡا فِىۡ دِيَارِهِمۡ جٰثِمِيۡنَۙ﴿۶۷﴾
১১-৬৭ : অতঃপর যাহারা সীমালঙ্ঘন করিয়াছিল মহানাদ তাহাদেরকে আঘাত করিল; ফলে উহারা নিজ নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় শেষ হইয়া গেল;
كَاَنۡ لَّمۡ يَغۡنَوۡا فِيۡهَا ؕ اَلَاۤ اِنَّ ثَمُوۡدَا۟ كَفَرُوۡا رَبَّهُمۡؕ اَلَا بُعۡدًا لِّـثَمُوۡدَ﴿۶۸﴾
১১-৬৮ : যেন তাহারা সেখানে কখনও বসবাস করে নাই। জানিয়া রাখ! সামূদ সম্প্রদায় তো তাহাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করিয়াছিল। জানিয়া রাখ! ধ্বংসই হইল সামূদ সম্প্রদায়ের পরিণাম।
وَلَقَدۡ جَآءَتۡ رُسُلُنَاۤ اِبۡرٰهِيۡمَ بِالۡبُشۡرٰى قَالُوۡا سَلٰمًا ؕ قَالَ سَلٰمٌ فَمَا لَبِثَ اَنۡ جَآءَ بِعِجۡلٍ حَنِيۡذٍ﴿۶۹﴾
১১-৬৯ : আমার ফিরিশ্তাগণ তো সুসংবাদ লইয়া ইব্রাহীমের নিকট আসিল। তাহারা বলিল, ‘সালাম’। সেও বলিল, ‘সালাম’। সে অবিলম্বে এক কাবাবকৃত গো - বৎস লইয়া আসিল।
فَلَمَّا رَاٰۤ اَيۡدِيَهُمۡ لَا تَصِلُ اِلَيۡهِ نَـكِرَهُمۡ وَاَوۡجَسَ مِنۡهُمۡ خِيۡفَةً ؕ قَالُوۡا لَا تَخَفۡ اِنَّاۤ اُرۡسِلۡنَاۤ اِلٰى قَوۡمِ لُوۡطٍ ؕ﴿۷۰﴾
১১-৭০ : সে যখন দেখিল তাহাদের হস্ত উহার দিকে প্রসারিত হইতেছে না, তখন তাহাদেরকে অবাঞ্ছিত মনে করিল এবং তাহাদের সম্বন্ধে তাহার মনে ভীতি সঞ্চার হইল। তাহারা বলিল, ‘ভয় করিও না, আমরা তো লূতের সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হইয়াছি।’
وَامۡرَاَ تُهٗ قَآٮِٕمَةٌ فَضَحِكَتۡ فَبَشَّرۡنٰهَا بِاِسۡحٰقَ ۙ وَمِنۡ وَّرَآءِ اِسۡحٰقَ يَعۡقُوۡبَ﴿۷۱﴾
১১-৭১ : আর তাহার স্ত্রী দণ্ডায়মান এবং সে হাসিয়া ফেলিল। অতঃপর আমি তাহাকে ইস্হাকের ও ইস্হাকের পরবর্তী ইয়া‘কূবের সুসংবাদ দিলাম।
قَالَتۡ يٰوَيۡلَتٰٓى ءَاَلِدُ وَاَنَا عَجُوۡزٌ وَّهٰذَا بَعۡلِىۡ شَيۡخًا ؕ اِنَّ هٰذَا لَشَىۡءٌ عَجِيۡبٌ﴿۷۲﴾
১১-৭২ : সে বলিল, ‘কী আশ্চর্য! সন্তানের জননী হইব আমি, যখন আমি বৃদ্ধা এবং এই আমার স্বামী বৃদ্ধ! ইহা অবশ্যই এক অদ্ভুত ব্যাপার!’
قَالُوۡۤا اَتَعۡجَبِيۡنَ مِنۡ اَمۡرِ اللّٰهِ رَحۡمَتُ اللّٰهِ وَبَرَكٰتُهٗ عَلَيۡكُمۡ اَهۡلَ الۡبَيۡتِؕ اِنَّهٗ حَمِيۡدٌ مَّجِيۡدٌ﴿۷۳﴾
১১-৭৩ : তাহারা বলিল, ‘আল্লাহ্র কাজে তুমি বিস্ময় বোধ করিতেছ? হে পরিবারবর্গ! তোমাদের প্রতি রহিয়াছে আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও কল্যাণ। তিনি তো প্রশংসার্হ ও সম্মানার্হ।’
فَلَمَّا ذَهَبَ عَنۡ اِبۡرٰهِيۡمَ الرَّوۡعُ وَجَآءَتۡهُ الۡبُشۡرٰى يُجَادِلُــنَا فِىۡ قَوۡمِ لُوۡطٍؕ﴿۷۴﴾
১১-৭৪ : অতঃপর যখন ইব্রাহীমের ভীতি দূরীভূত হইল এবং তাহার নিকট সুসংবাদ আসিল তখন সে লূতের সম্প্রদায়ের সম্বন্ধে আমার সঙ্গে বাদানুবাদ করিতে লাগিল।
اِنَّ اِبۡرٰهِيۡمَ لَحَـلِيۡمٌ اَوَّاهٌ مُّنِيۡبٌ﴿۷۵﴾
১১-৭৫ : ইব্রাহীম তো অবশ্যই সহনশীল, কোমলহৃদয়, সতত আল্লাহ্ - অভিমুখী।
يٰۤـاِبۡرٰهِيۡمُ اَعۡرِضۡ عَنۡ هٰذَا ۚ اِنَّهٗ قَدۡ جَآءَ اَمۡرُ رَبِّكَ ۚ وَاِنَّهُمۡ اٰتِيۡهِمۡ عَذَابٌ غَيۡرُ مَرۡدُوۡدٍ﴿۷۶﴾
১১-৭৬ : হে ইব্রাহীম! ইহা হইতে বিরত হও; তোমার প্রতিপালকের বিধান আসিয়া পড়িয়াছে; উহাদের প্রতি তো আসিবে শাস্তি, যাহা অনিবার্য।
وَلَمَّا جَآءَتۡ رُسُلُـنَا لُوۡطًا سِىۡٓءَ بِهِمۡ وَضَاقَ بِهِمۡ ذَرۡعًا وَّقَالَ هٰذَا يَوۡمٌ عَصِيۡبٌ﴿۷۷﴾
১১-৭৭ : এবং যখন আমার প্রেরিত ফিরিশ্তাগণ লূতের নিকট আসিল তখন তাহাদের আগমনে সে বিষণ্ণ হইল এবং নিজেকে তাহাদের রক্ষায় অসমর্থ মনে করিল এবং বলিল, ‘ইহা নিদারুণ দিন!’
وَجَآءَهٗ قَوۡمُهٗ يُهۡرَعُوۡنَ اِلَيۡهِ ؕ وَمِنۡ قَبۡلُ كَانُوۡا يَعۡمَلُوۡنَ السَّيِّاٰتِ ؕ قَالَ يٰقَوۡمِ هٰٓؤُلَاۤءِ بَنٰتِىۡ هُنَّ اَطۡهَرُ لَـكُمۡ ۚ فَاتَّقُوۡا اللّٰهَ وَلَا تُخۡزُوۡنِ فِىۡ ضَيۡفِىۡ ؕ اَلَيۡسَ مِنۡكُمۡ رَجُلٌ رَّشِيۡدٌ﴿۷۸﴾
১১-৭৮ : তাহার সম্প্রদায় তাহার নিকট উদ্ভ্রান্ত হইয়া ছুটিয়া আসিল এবং পূর্ব হইতে তাহারা কুকর্মে লিপ্ত ছিল। সে বলিল, ‘হে আমার সম্প্রদায় ! ইহারা আমার কন্যা, তোমাদের জন্য ইহারা পবিত্র। সুতরাং আল্লাহ্কে ভয় কর এবং আমার মেহমানদের ব্যাপারে আমাকে হেয় করিও না। তোমাদের মধ্যে কি কোন ভাল মানুষ নাই?’
قَالُوۡا لَقَدۡ عَلِمۡتَ مَا لَـنَا فِىۡ بَنٰتِكَ مِنۡ حَقٍّ ۚ وَاِنَّكَ لَـتَعۡلَمُ مَا نُرِيۡدُ﴿۷۹﴾
১১-৭৯ : তাহারা বলিল, ‘তুমি তো জান, তোমার কন্যাদেরকে আমাদের কোন প্রয়োজন নাই; আমরা কি চাই তাহা তো তুমি জানই।’
قَالَ لَوۡ اَنَّ لِىۡ بِكُمۡ قُوَّةً اَوۡ اٰوِىۡۤ اِلٰى رُكۡنٍ شَدِيۡدٍ﴿۸۰﴾
১১-৮০ : সে বলিল, ‘তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকিত অথবা যদি আমি আশ্রয় লইতে পারিতাম কোন সৃদৃঢ় স্তম্ভের!’
قَالُوۡا يٰلُوۡطُ اِنَّا رُسُلُ رَبِّكَ لَنۡ يَّصِلُوۡۤا اِلَيۡكَ فَاَسۡرِ بِاَهۡلِكَ بِقِطۡعٍ مِّنَ الَّيۡلِ وَلَا يَلۡتَفِتۡ مِنۡكُمۡ اَحَدٌ اِلَّا امۡرَاَتَكَؕ اِنَّهٗ مُصِيۡبُهَا مَاۤ اَصَابَهُمۡؕ اِنَّ مَوۡعِدَهُمُ الصُّبۡحُؕ اَلَيۡسَ الصُّبۡحُ بِقَرِيۡبٍ﴿۸۱﴾
১১-৮১ : তাহারা বলিল, ‘হে লূত! নিশ্চয়ই আমরা তোমার প্রতিপালক - প্রেরিত ফিরিশতা। উহারা কখনই তোমার নিকট পৌঁছিতে পারিবে না। সুতরাং তুমি রাত্রির কোন এক সময়ে তোমার পরিবারবর্গসহ বাহির হইয়া পড় এবং তোমাদের মধ্যে কেহ পিছন দিকে তাকাইবে না, তোমার স্ত্রী ব্যতীত। উহাদের যাহা ঘটিবে তাহারও তাহাই ঘটিবে। নিশ্চয়ই প্রভাত উহাদের জন্য নির্ধারিত কাল। প্রভাত কি নিকটবর্তী নয়?
فَلَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا جَعَلۡنَا عَالِيَهَا سَافِلَهَا وَاَمۡطَرۡنَا عَلَيۡهَا حِجَارَةً مِّنۡ سِجِّيۡلٍۙ مَّنۡضُوۡدٍۙ﴿۸۲﴾
১১-৮২ : অতঃপর যখন আমার আদেশ অসিল তখন আমি জনপদকে উল্টাইয়া দিলাম এবং উহাদের উপর ক্রমাগত বর্ষণ করিলাম প্রস্তর - কঙ্কর,
مُّسَوَّمَةً عِنۡدَ رَبِّكَؕ وَ مَا هِىَ مِنَ الظّٰلِمِيۡنَ بِبَعِيۡدٍ﴿۸۳﴾
১১-৮৩ : যাহা তোমার প্রতিপালকের নিকট চিহ্নিত ছিল। ইহা জালিমদের হইতে দূরে নয়।
وَاِلٰى مَدۡيَنَ اَخَاهُمۡ شُعَيۡبًا ؕ قَالَ يٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰهَ مَا لَـكُمۡ مِّنۡ اِلٰهٍ غَيۡرُهٗ ؕ وَلَا تَـنۡقُصُوا الۡمِكۡيَالَ وَالۡمِيۡزَانَ اِنِّىۡۤ اَرٰٮكُمۡ بِخَيۡرٍ وَّاِنِّىۡۤ اَخَافُ عَلَيۡكُمۡ عَذَابَ يَوۡمٍ مُّحِيۡطٍ﴿۸۴﴾
১১-৮৪ : মাদইয়ানবাসীদের নিকট তাহাদের ভ্রাতা শু‘আয়বকে আমি পাঠাইয়াছিলাম। সে বলিয়াছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদত কর, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ্ নাই, মাপে ও ওজনে কম করিও না; আমি তোমাদেরকে সমৃদ্ধিশালী দেখিতেছি, কিন্তু আমি তোমাদের জন্য আশঙ্কা করিতেছি এক সর্বগ্রাসী দিবসের শাস্তি।
وَيٰقَوۡمِ اَوۡفُوا الۡمِكۡيَالَ وَالۡمِيۡزَانَ بِالۡقِسۡطِ وَلَا تَبۡخَسُوا النَّاسَ اَشۡيَآءَهُمۡ وَلَا تَعۡثَوۡا فِى الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِيۡنَ﴿۸۵﴾
১১-৮৫ : ‘হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপিও ও ওজন করিও, লোকদেরকে তাহাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করিয়া বেড়াইও না।
بَقِيَّتُ اللّٰهِ خَيۡرٌ لَّـكُمۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِيۡنَ ۚ وَمَاۤ اَنَا عَلَيۡكُمۡ بِحَفِيۡظٍ﴿۸۶﴾
১১-৮৬ : ‘যদি তোমরা মু’মিন হও তবে আল্লাহ্ - অনুমোদিত যাহা বাকি থাকিবে তোমাদের জন্য তাহা উত্তম; আমি তোমাদের তত্ত্বাবধায়ক নই।’
قَالُوۡا يٰشُعَيۡبُ اَصَلٰوتُكَ تَاۡمُرُكَ اَنۡ نَّتۡرُكَ مَا يَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَاۤ اَوۡ اَنۡ نَّـفۡعَلَ فِىۡۤ اَمۡوَالِنَا مَا نَشٰٓؤُا ؕ اِنَّكَ لَاَنۡتَ الۡحَـلِيۡمُ الرَّشِيۡدُ﴿۸۷﴾
১১-৮৭ : উহারা বলিল, ‘হে শু‘আয়ব! তোমার সালাত কি তোমাকে নির্দেশ দেয় যে, আমাদের পিতৃপুরুষেরা যাহার ‘ইবাদত করিত আমাদেরকে তাহা বর্জন করিতে হইবে অথবা আমরা আমাদের ধন - সম্পদ সম্পর্কে যাহা করি তাহাও? তুমি তো অবশ্যই সহিষ্ণু, ভাল মানুষ!’
قَالَ يٰقَوۡمِ اَرَءَيۡتُمۡ اِنۡ كُنۡتُ عَلٰى بَيِّنَةٍ مِّنۡ رَّبِّىۡ وَرَزَقَنِىۡ مِنۡهُ رِزۡقًا حَسَنًا ؕ وَمَاۤ اُرِيۡدُ اَنۡ اُخَالِفَكُمۡ اِلٰى مَاۤ اَنۡهٰٮكُمۡ عَنۡهُ ؕ اِنۡ اُرِيۡدُ اِلَّا الۡاِصۡلَاحَ مَا اسۡتَطَعۡتُ ؕ وَمَا تَوۡفِيۡقِىۡۤ اِلَّا بِاللّٰهِ ؕ عَلَيۡهِ تَوَكَّلۡتُ وَاِلَيۡهِ اُنِيۡبُ﴿۸۸﴾
১১-৮৮ : সে বলিল, ‘হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা ভাবিয়া দেখিয়াছ কি, আমি যদি আমার প্রতিপালক - প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত হইয়া থাকি এবং তিনি যদি তাঁহার নিকট হইতে আমাকে উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ দান করিয়া থাকেন তবে কী করিয়া আমি আমার কর্তব্য হইতে বিরত থাকিব ! আমি তোমাদেরকে যাহা নিষেধ করি আমি নিজে তাহা করিতে ইচ্ছা করি না। আমি তো আমার সাধ্যমত সংস্কারই করিতে চাই। আমার কার্যসাধন তো আল্লাহ্রই সাহায্যে ; আমি তাঁহারই উপর নির্ভর করি এবং আমি তাঁহারই অভিমুখী।
وَيٰقَوۡمِ لَا يَجۡرِمَنَّكُمۡ شِقَاقِىۡۤ اَنۡ يُّصِيۡبَكُمۡ مِّثۡلُ مَاۤ اَصَابَ قَوۡمَ نُوۡحٍ اَوۡ قَوۡمَ هُوۡدٍ اَوۡ قَوۡمَ صٰلِحٍؕ وَمَا قَوۡمُ لُوۡطٍ مِّنۡكُمۡ بِبَعِيۡدٍ﴿۸۹﴾
১১-৮৯ : ‘হে আমার সম্প্রদায় ! আমার সঙ্গে বিরোধ যেন কিছুতেই তোমাদেরকে এমন অপরাধ না করায় যাহাতে তোমাদের উপর তাহার অনুরূপ বিপদ আপতিত হইবে যাহা আপতিত হইয়াছিল সূরা নূহের সম্প্রদায়ের উপর অথবা হূদের সম্প্রদায়ের উপর কিংবা সালিহের সম্প্রদায়ের উপর; আর লূতের সম্প্রদায় তো তোমাদের হইতে দূরে নয়।
وَاسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّكُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَيۡهِؕ اِنَّ رَبِّىۡ رَحِيۡمٌ وَّدُوۡدٌ﴿۹۰﴾
১১-৯০ : ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাঁহার দিকে প্রত্যাবর্তন কর; আমার প্রতিপালক তো পরম দয়ালু, প্রেমময়।’
قَالُوۡا يٰشُعَيۡبُ مَا نَفۡقَهُ كَثِيۡرًا مِّمَّا تَقُوۡلُ وَاِنَّا لَـنَرٰٮكَ فِيۡنَا ضَعِيۡفًا ۚ وَلَوۡلَا رَهۡطُكَ لَرَجَمۡنٰكَ وَمَاۤ اَنۡتَ عَلَيۡنَا بِعَزِيۡزٍ﴿۹۱﴾
১১-৯১ : উহারা বলিল, ‘হে শু‘আয়ব! তুমি যাহা বল তাহার অনেক কথা আমরা বুঝি না এবং আমরা তো আমাদের মধ্যে তোমাকে দুর্বলই দেখিতেছি। তোমার স্বজনবর্গ না থাকিলে আমরা তোমাকে প্রস্তর নিক্ষেপ করিয়া মারিয়া ফেলিতাম; আর আমাদের উপর তুমি শক্তিশালী নও।’
قَالَ يٰقَوۡمِ اَرَهۡطِىۡۤ اَعَزُّ عَلَيۡكُمۡ مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اتَّخَذۡتُمُوۡهُ وَرَآءَكُمۡ ظِهۡرِيًّا ؕ اِنَّ رَبِّىۡ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ مُحِيۡطٌ﴿۹۲﴾
১১-৯২ : সে বলিল, ‘হে আমার সম্প্রদায় ! তোমাদের নিকট কি আমার স্বজনবর্গ আল্লাহ্ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী? তোমরা তাঁহাকে সম্পূর্ণ পশ্চাতে ফেলিয়া রাখিয়াছ। তোমরা যাহা কর আমার প্রতিপালক অবশ্যই তাহা পরিবেষ্টন করিয়া আছেন।
وَيٰقَوۡمِ اعۡمَلُوۡا عَلٰى مَكَانَتِكُمۡ اِنِّىۡ عَامِلٌ ؕ سَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ۙ مَنۡ يَّاۡتِيۡهِ عَذَابٌ يُّخۡزِيۡهِ وَمَنۡ هُوَ كَاذِبٌ ؕ وَارۡتَقِبُوۡۤا اِنِّىۡ مَعَكُمۡ رَقِيۡبٌ﴿۹۳﴾
১১-৯৩ : ‘হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা স্ব স্ব অবস্থায় কাজ করিতে থাক, আমিও আমার কাজ করিতেছি। তোমরা শীঘ্রই জানিতে পারিবে কাহার উপর আসিবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি এবং কে মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সঙ্গে প্রতীক্ষা করিতেছি।’
وَلَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّيۡنَا شُعَيۡبًا وَّالَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَهٗ بِرَحۡمَةٍ مِّنَّا ۚ وَاَخَذَتِ الَّذِيۡنَ ظَلَمُوا الصَّيۡحَةُ فَاَصۡبَحُوۡا فِىۡ دِيَارِهِمۡ جٰثِمِيۡنَۙ﴿۹۴﴾
১১-৯৪ : যখন আমার নির্দেশ আসিল তখন আমি শু‘আয়ব ও তাহার সঙ্গে যাহারা ঈমান আনিয়াছিল তাহাদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করিয়াছিলাম। অতঃপর যাহারা সীমালংঘন করিয়াছিল মহানাদ তাহাদেরকে আঘাত করিল, ফলে উহারা নিজ নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় পড়িয়া রহিল,
كَاَنۡ لَّمۡ يَغۡنَوۡا فِيۡهَا ؕ اَلَا بُعۡدًا لِّمَدۡيَنَ كَمَا بَعِدَتۡ ثَمُوۡدُ﴿۹۵﴾
১১-৯৫ : যেন তাহারা সেখানে কখনও বসবাস করে নাই। জানিয়া রাখ! ধ্বংসই ছিল মাদ্ইয়ান - বাসীদের পরিণাম, যেভাবে ধ্বংস হইয়াছিল সামূদ সম্প্রদায়।
وَلَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا مُوۡسٰى بِاٰيٰتِنَا وَسُلۡطٰنٍ مُّبِيۡنٍۙ﴿۹۶﴾
১১-৯৬ : আমি তো মূসাকে আমার নিদর্শনাবলী ও স্পষ্ট প্রমাণসহ পাঠাইয়াছিলাম,
اِلٰى فِرۡعَوۡنَ وَمَلَا۟ ٮِٕهٖ فَاتَّبَعُوۡۤا اَمۡرَ فِرۡعَوۡنَۚ وَمَاۤ اَمۡرُ فِرۡعَوۡنَ بِرَشِيۡدٍ﴿۹۷﴾
১১-৯৭ : ফির‘আওন ও তাহার প্রধানদের নিকট। কিন্তু তাহারা ফির‘আওনের কার্যকলাপের অনুসরণ করিত এবং ফির‘আওনের কার্যকলাপ ভাল ছিল না।
يَقۡدُمُ قَوۡمَهٗ يَوۡمَ الۡقِيٰمَةِ فَاَوۡرَدَهُمُ النَّارَؕ وَبِئۡسَ الۡوِرۡدُ الۡمَوۡرُوۡدُ﴿۹۸﴾
১১-৯৮ : সে কিয়ামতের দিন তাহার সম্প্রদায়ের অগ্রভাগে থাকিবে এবং সে উহাদেরকে লইয়া দোজখে প্রবেশ করিবে। যেখানে প্রবেশ করানো হইবে তাহা কত নিকৃষ্ট স্থান!
وَاُتۡبِعُوۡا فِىۡ هٰذِهٖ لَـعۡنَةً وَّيَوۡمَ الۡقِيٰمَةِ ؕ بِئۡسَ الرِّفۡدُ الۡمَرۡفُوۡدُ﴿۹۹﴾
১১-৯৯ : এই দুনিয়ায় উহাদেরকে করা হইয়াছিল অভিশাপগ্রস্ত এবং অভিশাপগ্রস্ত হইবে উহারা কিয়ামতের দিনেও। কত নিকৃষ্ট সে পুরস্কার যাহা উহাদেরকে দেওয়া হইবে!
ذٰ لِكَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الۡـقُرٰى نَقُصُّهٗ عَلَيۡكَ مِنۡهَا قَآٮِٕمٌ وَّحَصِيۡدٌ﴿۱۰۰﴾
১১-১০০ : ইহা জনপদসমূহের কতক সংবাদ যাহা আমি তোমার নিকট বর্ণনা করিতেছি। উহাদের মধ্যে কতক এখনও বিদ্যমান এবং কতক নির্মূল হইয়াছে।
وَمَا ظَلَمۡنٰهُمۡ وَلٰـكِنۡ ظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَهُمۡ فَمَاۤ اَغۡنَتۡ عَنۡهُمۡ اٰلِهَتُهُمُ الَّتِىۡ يَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مِنۡ شَىۡءٍ لَّمَّا جَآءَ اَمۡرُ رَبِّكَؕ وَمَا زَادُوۡهُمۡ غَيۡرَ تَتۡبِيۡبٍ﴿۱۰۱﴾
১১-১০১ : আমি উহাদের প্রতি জুলুম করি নাই কিন্তু উহারাই নিজেদের প্রতি জুলুম করিয়াছিল। যখন তোমার প্রতিপালকের বিধান আসিল তখন আল্লাহ্ ব্যতীত যে ইলাহসমূহের তাহারা ‘ইবাদত করিত তাহারা উহাদের কোন কাজে আসিল না। তাহারা ধ্বংস ব্যতীত উহাদের অন্য কিছু বৃদ্ধি করিল না।
وَكَذٰلِكَ اَخۡذُ رَبِّكَ اِذَاۤ اَخَذَ الۡقُرٰى وَهِىَ ظَالِمَةٌ ؕ اِنَّ اَخۡذَهٗۤ اَلِيۡمٌ شَدِيۡدٌ﴿۱۰۲﴾
১১-১০২ : এইরূপই তোমার প্রতিপালকের শাস্তি! তিনি শাস্তি দান করেন জনপদসমূহকে যখন উহারা জুলুম করিয়া থাকে। নিশ্চয়ই তাঁহার শাস্তি মর্মন্তুদ, কঠিন।
اِنَّ فِىۡ ذٰ لِكَ لَاٰيَةً لِّمَنۡ خَافَ عَذَابَ الۡاٰخِرَةِ ؕ ذٰ لِكَ يَوۡمٌ مَّجۡمُوۡعٌ ۙ لَّهُ النَّاسُ وَذٰ لِكَ يَوۡمٌ مَّشۡهُوۡدٌ﴿۱۰۳﴾
১১-১০৩ : যে আখিরাতের শাস্তিকে ভয় করে ইহাতে তো তাহার জন্য নিদর্শন আছে। ইহা সেই দিন, যেদিন সমস্ত মানুষকে একত্র করা হইবে; ইহা সেই দিন যেদিন সকলকে উপস্থিত করা হইবে;
وَمَا نُؤَخِّرُهٗۤ اِلَّا لِاَجَلٍ مَّعۡدُوۡدٍؕ﴿۱۰۴﴾
১১-১০৪ : এবং আমি নির্দিষ্ট কিছুকালের জন্য উহা স্থগিত রাখি মাত্র।
يَوۡمَ يَاۡتِ لَا تَكَلَّمُ نَفۡسٌ اِلَّا بِاِذۡنِهٖۚ فَمِنۡهُمۡ شَقِىٌّ وَّسَعِيۡدٌ﴿۱۰۵﴾
১১-১০৫ : যখন সেদিন আসিবে তখন আল্লাহ্র অনুমতি ব্যতীত কেহ কথা বলিতে পারিবে না; উহাদের মধ্যে কেহ হইবে হতভাগ্য আর কেহ ভাগ্যবান।
فَاَمَّا الَّذِيۡنَ شَقُوۡا فَفِى النَّارِ لَهُمۡ فِيۡهَا زَفِيۡرٌ وَّشَهِيۡقٌ ۙ﴿۱۰۶﴾
১১-১০৬ : অতঃপর যাহারা হতভাগ্য তাহারা থাকিবে দোজখে এবং সেখানে তাহাদের জন্য থাকিবে চিৎকার ও আর্তনাদ,
خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَالۡاَرۡضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّكَ ؕ اِنَّ رَبَّكَ فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيۡدُ ﴿۱۰۷﴾
১১-১০৭ : সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন ; নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক তাহাই করেন যাহা তিনি ইচ্ছা করেন।
وَاَمَّا الَّذِيۡنَ سُعِدُوۡا فَفِى الۡجَـنَّةِ خٰلِدِيۡنَ فِيۡهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَالۡاَرۡضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّكَ ؕ عَطَآءً غَيۡرَ مَجۡذُوۡذٍ﴿۱۰۸﴾
১১-১০৮ : পক্ষান্তরে, যাহারা ভাগ্যবান তাহারা থাকিবে জান্নাতে, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে, যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; ইহা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।
فَلَا تَكُ فِىۡ مِرۡيَةٍ مِّمَّا يَعۡبُدُ هٰٓؤُلَاۤءِ ؕ مَا يَعۡبُدُوۡنَ اِلَّا كَمَا يَعۡبُدُ اٰبَآؤُهُمۡ مِّنۡ قَبۡلُؕ وَاِنَّا لَمُوَفُّوۡهُمۡ نَصِيۡبَهُمۡ غَيۡرَ مَنۡقُوۡصٍ﴿۱۰۹﴾
১১-১০৯ : সুতরাং উহারা যাহাদের ‘ইবাদত করে তাহাদের সম্বন্ধে সংশয়ে থাকিও না, পূর্বে উহাদের পিতৃপুরুষেরা যাহাদের ‘ইবাদত করিত উহারা তাহাদেরই ‘ইবাদত করে। অবশ্যই আমি উহাদেরকে উহাদের প্রাপ্য পুরাপুরি দিব - কিছুমাত্র কম করিব না।
وَلَقَدۡ اٰتَيۡنَا مُوۡسَى الۡكِتٰبَ فَاخۡتُلِفَ فِيۡهِ ؕ وَ لَوۡلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتۡ مِنۡ رَّبِّكَ لَـقُضِىَ بَيۡنَهُمۡ ؕ وَاِنَّهُمۡ لَفِىۡ شَكٍّ مِّنۡهُ مُرِيۡبٍ﴿۱۱۰﴾
১১-১১০ : নিশ্চয়ই আমি মূসাকে কিতাব দিয়াছিলাম, অতঃপর ইহাতে মতভেদ ঘটিয়াছিল। তোমার প্রতিপালকের পূর্বসিদ্ধান্ত না থাকিলে উহাদের মীমাংসা হইয়া যাইত। উহারা অবশ্যই ইহার সম্বন্ধে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে ছিল।
وَاِنَّ كُلًّا لَّمَّا لَيُوَفِّيَنَّهُمۡ رَبُّكَ اَعۡمَالَهُمۡ ؕ اِنَّهٗ بِمَا يَعۡمَلُوۡنَ خَبِيۡرٌ﴿۱۱۱﴾
১১-১১১ : যখন সময় আসিবে তখন অবশ্যই তোমার প্রতিপালক উহাদের প্রত্যেককে তাহার কর্মফল পুরাপুরি দিবেন। উহারা যাহা করে তিনি তো সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত;
فَاسۡتَقِمۡ كَمَاۤ اُمِرۡتَ وَمَنۡ تَابَ مَعَكَ وَلَا تَطۡغَوۡا ؕ اِنَّهٗ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِيۡرٌ ﴿۱۱۲﴾
১১-১১২ : সুতরাং তুমি যেভাবে আদিষ্ট হইয়াছ তাহাতে স্থির থাক এবং তোমার সঙ্গে যাহারা ঈমান আনিয়াছে তাহারাও স্থির থাকুক; এবং সীমালংঘন করিও না। তোমরা যাহা কর নিশ্চয়ই তিনি তাহার সম্যক দ্রষ্টা।
وَلَا تَرۡكَنُوۡۤا اِلَى الَّذِيۡنَ ظَلَمُوۡا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُۙ وَمَا لَـكُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مِنۡ اَوۡلِيَآءَ ثُمَّ لَا تُنۡصَرُوۡنَ﴿۱۱۳﴾
১১-১১৩ : যাহারা সীমালংঘন করিয়াছে তোমরা তাহাদের প্রতি ঝুঁকিয়া পড়িও না; পড়িলে অগ্নি তোমাদেরকে স্পর্শ করিবে। এই অবস্থায় আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক থাকিবে না এবং তোমাদের সাহায্য করা হইবে না।
وَاَقِمِ الصَّلٰوةَ طَرَفَىِ النَّهَارِ وَزُلَـفًا مِّنَ الَّيۡلِ ؕ اِنَّ الۡحَسَنٰتِ يُذۡهِبۡنَ السَّيِّاٰتِ ؕ ذٰ لِكَ ذِكۡرٰى لِلذّٰكِرِيۡنَ ۚ﴿۱۱۴﴾
১১-১১৪ : তুমি সালাত কায়েম কর দিবসের দুই প্রান্তভাগে ও রজনীর প্রথমাংশে। সৎকর্ম অবশ্যই অসৎকর্ম মিটাইয়া দেয়। যাহারা উপদেশ গ্রহণ করে, ইহা তাহাদের জন্য এক উপদেশ।
وَاصۡبِرۡ فَاِنَّ اللّٰهَ لَا يُضِيۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِيۡنَ﴿۱۱۵﴾
১১-১১৫ : তুমি ধৈর্য ধারন কর, কারণ নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল নষ্ট করেন না।
فَلَوۡ لَا كَانَ مِنَ الۡقُرُوۡنِ مِنۡ قَبۡلِكُمۡ اُولُوۡا بَقِيَّةٍ يَّـنۡهَوۡنَ عَنِ الۡفَسَادِ فِى الۡاَرۡضِ اِلَّا قَلِيۡلًا مِّمَّنۡ اَنۡجَيۡنَا مِنۡهُمۡ ۚ وَاتَّبَعَ الَّذِيۡنَ ظَلَمُوۡا مَاۤ اُتۡرِفُوۡا فِيۡهِ وَكَانُوۡا مُجۡرِمِيۡنَ﴿۱۱۶﴾
১১-১১৬ : তোমাদের পূর্বযুগে আমি যাহাদেরকে রক্ষা করিয়াছিলাম তাহাদের মধ্যে অল্প কতক ব্যতীত সজ্জন ছিল না, যাহারা পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটাইতে নিষেধ করিত। সীমালংঘনকারীরা যাহাতে সুখ - স্বাচ্ছন্দ্য পাইত তাহারই অনুসরণ করিত এবং উহারা ছিল অপরাধী।
وَمَا كَانَ رَبُّكَ لِيُهۡلِكَ الۡقُرٰى بِظُلۡمٍ وَّاَهۡلُهَا مُصۡلِحُوۡنَ﴿۱۱۷﴾
১১-১১৭ : তোমার প্রতিপালক এইরূপ নন যে, তিনি অন্যায়ভাবে জনপদ ধ্বংস করিবেন, অথচ উহার অধিবাসীরা পুণ্যবান।
وَلَوۡ شَآءَ رَبُّكَ لَجَـعَلَ النَّاسَ اُمَّةً وَّاحِدَةً وَّلَا يَزَالُوۡنَ مُخۡتَلِفِيۡنَۙ﴿۱۱۸﴾
১১-১১৮ : তোমার প্রতিপালক ইচ্ছা করিলে সমস্ত মানুষকে এক জাতি করিতে পারিতেন, কিন্তু তাহারা মতভেদ করিতেই থাকিবে,
اِلَّا مَنۡ رَّحِمَ رَبُّكَ ؕ وَلِذٰلِكَ خَلَقَهُمۡ ؕ وَتَمَّتۡ كَلِمَةُ رَبِّكَ لَاَمۡلَـئَنَّ جَهَـنَّمَ مِنَ الۡجِنَّةِ وَالنَّاسِ اَجۡمَعِيۡنَ﴿۱۱۹﴾
১১-১১৯ : তবে উহারা নয়, যাহাদেরকে তোমার প্রতিপালক দয়া করেন এবং তিনি উহাদেরকে এইজন্যই সৃষ্টি করিয়াছেন। ‘আমি আল জিন ও মানুষ উভয় দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করিবই’, তোমার প্রতিপালকের এই কথা পূর্ণ হইবেই।
وَكُلًّا نَّقُصُّ عَلَيۡكَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الرُّسُلِ مَا نُثَبِّتُ بِهٖ فُؤَادَكَ ۚ وَجَآءَكَ فِىۡ هٰذِهِ الۡحَـقُّ وَمَوۡعِظَةٌ وَّذِكۡرٰى لِلۡمُؤۡمِنِيۡنَ﴿۱۲۰﴾
১১-১২০ : রাসূলদের ঐ সকল বৃত্তান্ত আমি তোমার নিকট বর্ণনা করিতেছি, যদ্দ্বারা আমি তোমার চিত্তকে দৃঢ় করি, ইহার মাধ্যমে তোমার নিকট আসিয়াছে সত্য এবং মু’মিনদের জন্য আসিয়াছে উপদেশ ও সাবধানবাণী।
وَقُلْ لِّـلَّذِيۡنَ لَا يُؤۡمِنُوۡنَ اعۡمَلُوۡا عَلٰى مَكَانَتِكُمۡؕ اِنَّا عٰمِلُوۡنَۙ ﴿۱۲۱﴾
১১-১২১ : যাহারা ঈমান আনে না তাহাদেরকে বল, ‘তোমরা স্ব স্ব অবস্থানে কাজ করিতে থাক, আমরাও আমাদের কাজ করিতেছি,
وَانْـتَظِرُوۡا ۚ اِنَّا مُنۡتَظِرُوۡنَ﴿۱۲۲﴾
১১-১২২ : ‘এবং তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমরাও প্রতীক্ষা করিতেছি।’
وَلِلّٰهِ غَيۡبُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ وَاِلَيۡهِ يُرۡجَعُ الۡاَمۡرُ كُلُّهٗ فَاعۡبُدۡهُ وَتَوَكَّلۡ عَلَيۡهِؕ وَمَا رَبُّكَ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ﴿۱۲۳﴾
১১-১২৩ : আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহ্রই এবং তাঁহারই নিকট সমস্ত কিছু প্রত্যানীত হইবে। সুতরাং তুমি তাঁহার ‘ইবাদত কর এবং তাঁহার উপর নির্ভর কর। তোমরা যাহা কর সে সম্বন্ধে তোমার প্রতিপালক অনবহিত নন।