সূরা আল আনকাবুত

দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহ্‌র নামে,

নিচের ▶ বাটনে ক্লিক করুন

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১ : আলিফ - লাম - মীম;

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২ : মানুষ কি মনে করে যে, ‘আমরা ঈমান আনিয়াছি’ এই কথা বলিলেই উহাদেরকে পরীক্ষা না করিয়া অব্যাহতি দেওয়া হইবে?

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩ : আমি তো ইহাদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করিয়াছিলাম ; আল্লাহ্‌ অবশ্যই প্রকাশ করিয়া দিবেন কাহারা সত্যবাদী এবং তিনি অবশ্যই প্রকাশ করিয়া দিবেন কাহারা মিথ্যাবাদী।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪ : তবে কি যাহারা মন্দ কর্ম করে তাহারা মনে করে যে, তাহারা আমার আয়ত্তের বাহিরে চলিয়া যাইবে? তাহাদের সিদ্ধান্ত কত মন্দ!

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫ : যে আল্লাহ্‌র সাক্ষাৎ কামনা করে সে জানিয়া রাখুক, আল্লাহ্‌র নির্ধারিত কাল আসিবেই। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬ : যে কেহ সাধনা করে, সে তো নিজের জন্যই সাধনা করে ; আল্লাহ তো বিশ্বজগৎ হইতে অমুখাপেক্ষী।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৭ : এবং যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি নিশ্চয়ই তাহাদের হইতে তাহাদের মন্দ কর্মগুলি মিটাইয়া দিব এবং আমি অবশ্যই তাহাদেরকে প্রতিদান দিব, তাহারা যে উত্তম কর্ম করিত তাহার।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৮ : আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়াছি তাহার পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করিতে। তবে উহারা যদি তোমার উপর বল প্রয়োগ করে আমার সঙ্গে এমন কিছু শরীক করিতে যাহার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নাই, তুমি তাহাদেরকে মানিও না। আমারই নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আমি তোমাদেরকে জানাইয়া দিব তোমরা কী করিতেছিলে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৯ : যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি অবশ্যই তাহাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করিব।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১০ : মানুষের মধ্যে কতক বলে, ‘আমরা আল্লাহে বিশ্বাস করি, কিন্তু আল্লাহ্‌র পথে যখন উহারা নিগৃহীত হয়, তখন উহারা মানুষের পীড়নকে আল্লাহ্‌র শাস্তির মত গণ্য করে এবং তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে কোন সাহায্য আসিলে উহারা বলিতে থাকে, ‘আমরা তো তোমাদের তো তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম।’ বিশ্ববাসীর অন্তঃকরণে যাহা আছে, আল্লাহ্‌ কি তাহা সম্যক অবগত নহেন ?’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১১ : আল্লাহ্‌ অবশ্যই প্রকাশ করিয়া দিবেন কাহারা ঈমান আনিয়াছে এবং অবশ্যই প্রকাশ করিয়া দিবেন কাহারা মুনাফিক।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১২ : কাফিররা মু’মিনদেরকে বলে, ‘আমাদের পথ অনুসরণ কর তাহা হইলে আমরা তোমাদের পাপভার বহন করিব।’ কিন্তু উহারা তো তাহাদের পাপভারের কিছুই বহন করিবে না। উহারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১৩ : উহারা নিজেদের ভার বহন করিবে এবং নিজেদের বোঝার সঙ্গে আরও কিছু বোঝা ; আর উহারা যে মিথ্যা উদ্ভাবন করে সে সম্পর্কে কিয়ামত দিবসে অবশ্যই উহাদেরকে প্রশ্ন করা হইবে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১৪ : আমি তো সূরা নূহ্‌কে তাহার সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করিয়াছিলাম। সে উহাদের মধ্যে অবস্থান করিয়াছিল পঞ্চাশ কম হাজার বৎসর। অতঃপর প্লাবন উহাদেরকে গ্রাস করে ; কারণ উহারা ছিল সীমালংঘনকারী।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১৫ : অতঃপর আমি তাহাকে এবং যাহারা তরণীতে আরোহণ করিয়াছিল তাহাদেরকে রক্ষা করিলাম এবং বিশ্বজগতের জন্য ইহাকে করিলাম একটি নিদর্শন।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১৬ : স্মরণ কর ইব্‌রাহীমের কথা, সে তাহার সম্প্রদায়কে বলিয়াছিল, তোমরা আল্লাহ্‌র ‘ইবাদত কর এবং তাঁহাকে ভয় কর ; তোমাদের জন্য ইহাই শ্রেয় যদি তোমরা জানিতে !

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১৭ : ‘তোমরা তো আল্লাহ্‌ ব্যতীত কেবল মূর্তিপূজা করিতেছ এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করিতেছ। তোমরা আল্লাহ্‌ ব্যতীত যাহাদের পূজা কর তাহারা তোমাদের জীবনোপকরণের মালিক নয়। সুতরাং তোমরা জীবনোপকরণ কামনা কর আল্লাহ্‌র নিকট এবং তাঁহার ‘ইবাদত কর ও তাঁহার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তোমরা তাঁহারই নিকট প্রত্যাবর্তিত হইবে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১৮ : ‘তোমরা যদি অস্বীকার কর তবে তো তোমাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যাবাদী বলিয়াছিল।সুস্পষ্টভাবে প্রচার করিয়া দেওয়া ব্যতীত রাসূলের আর কোন দায়িত্ব নাই।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-১৯ : উহারা কি লক্ষ্য করে না, কিভাবে আল্লাহ্‌ সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন, অতঃপর উহা পুনরায় সৃষ্টি করেন ? এটা আল্লাহ্‌র জন্য সহজ।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২০ : বল, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং অনুধাবন কর, কিভাবে তিনি সৃষ্টি আরম্ভ করিয়াছেন! অতঃপর আল্লাহ্‌ সৃষ্টি করিবেন পরবর্তী সৃষ্টি। আল্লাহ্‌ তো সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২১ : তিনি যাহাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন এবং যাহার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। তোমরা তাঁহারই নিকট প্রত্যাবর্তিত হইবে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২২ : তোমরা আল্লাহ্‌কে ব্যর্থ করিতে পারিবে না পৃথিবীতে, আর না আকাশে এবং আল্লাহ্‌ ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক নাই, সাহায্যকারীও নাই।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২৩ : যাহারা আল্লাহ্‌র নিদর্শন ও তাঁহার সাক্ষাৎ অস্বীকার করে, তাহারাই আমার অনুগ্রহ হইতে নিরাশ হয়। আর তাহাদের জন্য আছে মর্মন্তুদ শাস্তি।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২৪ : উত্তরে ইব্‌রাহীমের সম্প্রদায় শুধু এই বলিল, ‘ইহাকে হত্যা কর অথবা অগ্নিদগ্ধ কর।’ কিন্তু আল্লাহ্‌ তাহাকে অগ্নি হইতে রক্ষা করিলেন। ইহাতে অবশ্যই নিদর্শন রহিয়াছে মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২৫ : ইব্‌রাহীম বলিল, ‘তোমরা তো আল্লাহ্‌র পরিবর্তে মূর্তিগুলিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করিয়াছ, পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্বের খাতিরে। পরে কিয়ামতের দিন তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করিবে এবং পরস্পর পরস্পরকে অভিসম্পাত দিবে। তোমাদের আবাস হইবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকিবে না।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২৬ : লূত তাহার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করিল। ইব্‌রাহীম বলিল, ‘আমি আমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করিতেছি। তিনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২৭ : আমি ইব্‌রাহীমকে দান করিলাম ইসহাক ও ইয়া‘কূব এবং তাহার বংশধরদের জন্য স্থির করিলাম নবুওয়াত ও কিতাব এবং আমি তাহাকে দুনিয়ায় পুরস্কৃত করিয়াছিলাম ; আখিরাতেও সে নিশ্চয়ই সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম হইবে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২৮ : স্মরণ কর লূতের কথা, সে তাহার সম্প্রদায়কে বলিয়াছিল, ‘তোমরা তো এমন অশ্লীল কর্ম করিতেছ, যাহা তোমাদের পূর্বে বিশ্বে কেহ করে নাই।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-২৯ : ‘তোমরাই তো পুরুষে উপগত হইতেছ, তোমরাই তো রাহাজানি করিয়া থাক এবং তোমরাই তো নিজেদের মজলিসে প্রকাশ্যে ঘৃণ্য কর্ম করিয়া থাক।’ উত্তরে তাহার সম্প্রদায় শুধু এই বলিল, ‘আমাদের উপর আল্লাহ্‌র শাস্তি আনয়ন কর - যদি তুমি সত্যবাদী হও।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩০ : সে বলিল, ‘হে আমার প্রতিপালক ! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩১ : যখন আমার প্রেরিত ফিরিশ্‌তাগণ সুসংবাদসহ ইব্‌রাহীমের নিকট আসিল, তাহারা বলিয়াছিল, ‘আমরা এই জনপদবাসীদেরকে ধ্বংস করিব, ইহার অধিবাসীরা তো জালিম।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩২ : ইব্‌রাহীম বলিল, ‘এই জনপদে তো লূত রহিয়াছে।’ উহারা বলিল, ‘সেখানে কাহারা আছে, তাহা আমরা ভাল জানি, আমরা তো লূতকে ও তাহার পরিজনবর্গকে রক্ষা করিবই, তাহার স্ত্রীকে ব্যতীত ; সে তো পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩৩ : এবং যখন আমার প্রেরিত ফিরিশতাগণ লূতের নিকট আসিল, তখন তাহাদের জন্য সে বিষণ্ন হইয়া পড়িল এবং নিজেকে তাহাদের রক্ষায় অসমর্থ মনে করিল। উহারা বলিল, ‘ভয় করিও না, দুঃখ করিও না ; আমরা তোমাকে ও তোমার পরিজনবর্গকে রক্ষা করিব, তোমার স্ত্রী ব্যতীত; সে তো পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত ;

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩৪ : ‘আমরা এই জনপদবাসীদের উপর আকাশ হইতে শাস্তি নাযিল করিব, কারণ উহারা পাপাচার করিতেছিল।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩৫ : আমি তো বোধশক্তিসম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য ইহাতে একটি স্পষ্ট নিদর্শন রাখিয়াছি।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩৬ : আমি মাদ্ইয়ানবাসীদের প্রতি তাহাদের ভ্রাতা শু‘আয়বকে পাঠাইয়াছিলাম। সে বলিয়াছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা আল্লাহ্‌র ‘ইবাদত কর, শেষ দিবসকে ভয় কর এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটাইও না।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩৭ : কিন্তু উহারা তাহার প্রতি মিথ্যা আরোপ করিল; অতঃপর উহারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হইল ; ফলে উহারা নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় শেষ হইয়া গেল।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩৮ : এবং আমি ‘আদ ও সামূদকে ধ্বংস করিয়াছিলাম ; উহাদের বাড়িঘরই তোমাদের জন্য ইহার সুস্পষ্ট প্রমাণ। শয়তান উহাদের কাজকে উহাদের দৃষ্টিতে শোভন করিয়াছিল এবং উহাদেরকে সৎপথ অবলম্বনে বাধা দিয়াছিল, যদিও উহারা ছিল বিচক্ষণ।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৩৯ : এবং আমি সংহার করিয়াছিলাম কারূন, ফির‘আওন ও হামানকে। মূসা উহাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ আসিয়াছিল ; তখন তাহারা দেশে দম্ভ করিত; কিন্তু উহারা আমার শাস্তি এড়াইতে পারে নাই।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪০ : উহাদের প্রত্যেককেই আমি তাহার অপরাধের জন্য শাস্তি দিয়াছিলাম : উহাদের কাহারও প্রতি প্রেরণ করিয়াছি প্রস্তরসহ প্রচণ্ড ঝটিকা, উহাদের কাহাকেও আঘাত করিয়াছিল মহানাদ, কাহাকেও আমি প্রোথিত করিয়াছিলাম ভূগর্ভে এবং কাহাকেও করিয়াছিলাম নিমজ্জিত। আল্লাহ্‌ তাহাদের প্রতি কোন জুলুম করেন নাই ; তাহারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করিয়াছিল।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪১ : যাহারা আল্লাহ্‌র পরিবর্তে অপরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে তাহাদের দৃষ্টান্ত মাকড়সার ন্যায়, যে নিজের জন্য ঘর বানায় এবং ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরই তো দুর্বলতম, যদি উহারা জানিত।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪২ : উহারা আল্লাহ্‌র পরিবর্তে যাহা কিছুকে আহ্বান করে, আল্লাহ্‌ তো তাহা জানেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪৩ : এই সকল দৃষ্টান্ত আমি মানুষের জন্য দেই, কিন্তু কেবল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই ইহা বুঝে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪৪ : আল্লাহ্‌ যথাযথভাবে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করিয়াছেন ; ইহাতে অবশ্যই নিদর্শন রহিয়াছে মু’মিনদের জন্য।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪৫ : তুমি আবৃত্তি কর কিতাব হইতে যাহা তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়। এবং সালাত কায়েম কর। সালাত অবশ্যই বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কার্য হইতে। আর আল্লাহ্‌র স্মরণই তো র্সবশ্রষ্ঠে। তোমরা যাহা কর আল্লাহ্‌ তাহা জানেন।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪৬ : তোমরা উত্তম পন্থা ব্যতীত কিতাবীদের সঙ্গে বিতর্ক করিবে না, তবে তাহাদের সঙ্গে করিতে পার, যাহারা উহাদের মধ্যে সীমালংঘনকারী। এবং বল, ‘আমাদের প্রতি ও তোমাদের প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে, তাহাতে আমরা বিশ্বাস করি এবং আমাদের ইলাহ্ ও তোমাদের ইলাহ্ তো একই এবং আমরা তাঁহারই প্রতি আত্মসর্মপণকারী।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪৭ : এইভাবেই আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি এবং যাহাদেরকে আমি কিতাব দিয়াছিলাম তাহারা ইহাতে বিশ্বাস করে। আর ইহাদেরও কেহ কেহ ইহাতে বিশ্বাস করে। কেহ অস্বীকার করে না আমার নিদর্শনাবলী কাফির ব্যতীত।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪৮ : তুমি তো ইহার পূর্বে কোন কিতাব পাঠ কর নাই এবং স্বহস্তে কোন কিতাব লিখ নাই যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করিবে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৪৯ : বরং যাহাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে বস্তুত তাহাদের অন্তরে ইহা স্পষ্ট নিদর্শন। কেবল জালিমরাই আমার নিদর্শন অস্বীকার করে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫০ : উহারা বলে, ‘তাহার প্রতিপালকের নিকট হইতে তাহার নিকট নিদর্শন প্রেরিত হয় না কেন?’ বল, নিদর্শন তাে আল্লাহ্‌রই ইখ্‌তিয়ারে। আমি তাে একজন প্রকাশ্য সতর্ককারী মাত্র।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫১ : ইহা কি উহাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি, যাহা উহাদের নিকট পাঠ করা হয়? ইহাতে অবশ্যই অনুগ্রহ ও উপদেশ রহিয়াছে সেই কওমের জন্য যাহারা ঈমান আনে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫২ : বল, ‘আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যাহা আছে তাহা তিনি অবগত এবং যাহারা অসত্যে বিশ্বাস করে ও আল্লাহ্‌কে অস্বীকার করে তাহারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫৩ : উহারা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করিতে বলে। যদি নির্ধারিত কাল না থাকিত তবে শাস্তি তাহাদের উপর অবশ্যই আসিত। নিশ্চয়ই উহাদের উপর শাস্তি আসিবে আকস্মিকভাবে, উহাদের অজ্ঞাতসারে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫৪ : উহারা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করিতে বলে, জাহান্নাম তো কাফিরদের পরিবেষ্টন করিবেই।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫৫ : সেই দিন শাস্তি উহাদেরকে আচ্ছন্ন করিবে ঊর্ধ্ব ও অধঃদেশ হইতে এবং তিনি বলিবেন, ‘তোমরা যাহা করিতে তাহা আস্বাদন কর।’

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫৬ : হে আমার মু’মিন বান্দাগণ ! নিশ্চয় আমার পৃথিবী প্রশস্ত; সুতরাং তোমরা আমারই ‘ইবাদত কর।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫৭ : জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণকারী; অতঃপর তোমরা আমারই নিকট প্রত্যাবর্তিত হইবে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫৮ : যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি অবশ্যই তাহাদের বসবাসের জন্য সুউচ্চ প্রাসোয়াদ দান করিব জান্নাতে, যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, কত উত্তম প্রতিদান সেই সকল কর্মশীলদের জন্য,

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৫৯ : যাহারা ধৈর্য ধারণ করে এবং তাহাদের প্রতিপালকের উপর নির্ভর করে।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬০ : এমন কত জীবজন্তু আছে যাহারা নিজেদের খাদ্য মওজুদ রাখে না। আল্লাহ্‌ই রিযিক দান করেন উহাদেরকে ও তোমাদেরকে ; এবং তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬১ : যদি তুমি উহাদেরকে জিজ্ঞাসা কর, ‘কে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করিয়াছেন এবং চন্দ্র - সূর্যকে নিয়ন্ত্রিত করিয়াছেন?’ উহারা অবশ্যই বলিবে, ‘আল্লাহ’। তাহা হইলে, উহারা কোথায় ফিরিয়া যাইতেছে!

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬২ : আল্লাহ্‌ তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার জন্য ইচ্ছা তাহার রিযিক বর্ধিত করেন এবং যাহার জন্য ইচ্ছা উহা সীমিত করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬৩ : যদি তুমি উহাদেরকে জিজ্ঞাসা কর, আকাশ হইতে বারি বর্ষণ করিয়া কে ভূমিকে সঞ্জীবিত করেন উহার মৃত্যুর পর ? উহারা অবশ্যই বলিবে, ‘আল্লাহ’। বল, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌রই।’ কিন্তু উহাদের অধিকাংশই ইহা অনুধাবন করে না।

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬৪ : এই পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া - কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পারলৌকিক জীবনই তো প্রকৃত জীবন, যদি উহারা জানিত!

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬৫ : উহারা যখন নৌযানে আরোহণ করে তখন উহারা বিশুদ্ধচিত্ত হইয়া একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ্‌কে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন স্থলে ভিড়াইয়া উহাদেরকে উদ্ধার করেন, তখন উহারা শির্‌কে লিপ্ত হয়,

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬৬ : যাহাতে উহাদের প্রতি আমার দান উহারা অস্বীকার করে এবং ভোগ - বিলাসে মত্ত থাকে ; অচিরেই উহারা জানিতে পারিবে !

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬৭ : উহারা কি দেখে না আমি ‘হারাম’কে নিরাপদ স্থান করিয়াছি, অথচ ইহার চতুষ্পার্শ্বে যেসব মানুষ আছে, তাহাদের উপর হামলা করা হয়, তবে কি উহারা অসত্যেই বিশ্বাস করিবে এবং আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে ?

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬৮ : যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে অথবা তাঁহার নিকট হইতে আগত সত্যকে অস্বীকার করে তাহার অপেক্ষা অধিক জালিম আর কে ? জাহান্নামই কি কাফিরদের আবাস নয় ?

সূরা আল আনকাবুত

২৯-৬৯ : যাহারা আমার উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করে আমি তাহাদেরকে অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করিব। আল্লাহ্‌ অবশ্যই সৎর্কমপরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।