৫৯-২ : তিনিই কিতাবীদের মধ্যে যাহারা কাফির তাহাদেরকে প্রথমবার সমবেতভাবে তাহাদের আবাসভূমি হইতে বিতাড়িত করিয়াছিলেন। তোমরা কল্পনাও কর নাই যে, উহারা নির্বাসিত হইবে এবং উহারা মনে করিয়াছিল উহাদের দুর্গগুলি উহাদেরকে রক্ষা করিবে আল্লাহ্ হইতে ; কিন্তু আল্লাহ্র শাস্তি এমন এক দিক হইতে আসিল যাহা ছিল উহাদের ধারণাতীত এবং উহাদের অন্তরে তাহা ত্রাসের সঞ্চার করিল। উহারা ধ্বংস করিয়া ফেলিল নিজেদের বাড়িঘর নিজেদের হাতে এবং মু’মিনদের হাতেও ; অতএব হে চক্ষুষ্মান ব্যক্তিগণ! তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
৫৯-৮ : এই সম্পদ অভাবগ্রস্ত মুহাজিরগণের জন্য যাহারা নিজেদের ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি হইতে উৎখাত হইয়াছে। তাহারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করে এবং আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের সাহায্য করে। উহারাই তো সত্যাশ্রয়ী।
৫৯-৯ : আর তাহাদের জন্যও, মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে যাহারা এই নগরীতে বসবাস করিয়াছে ও ঈমান আনিয়াছে, তাহারা মুহাজিরদেরকে ভালবাসে এবং মুহাজিরদেরকে যাহা দেওয়া হইয়াছে তাহার জন্য তাহারা অন্তরে আকাঙ্খা পোষণ করে না, আর তাহারা তাহাদেরকে নিজেদের উপর অগ্রাধিকার দেয় নিজেরা অভাবগ্রস্ত হইলেও। যাহাদেরকে অন্তরের কার্পণ্য হইতে মুক্ত রাখা হইয়াছে, তাহারাই সফলকাম।
৫৯-১০ : যাহারা উহাদের পরে আসিয়াছে, তাহারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এবং ঈমানে অগ্রণী আমাদের ভ্রাতাগণকে ক্ষমা কর এবং মু’মিনদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে বিদ্বেষ রাখিও না। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি তো দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।’
৫৯-১১ : তুমি কি মুনাফিকদেরকে দেখ নাই ? উহারা কিতাবীদের মধ্যে যাহারা কুফরী করিয়াছে উহাদের সেই সব সঙ্গীকে বলে, ‘তোমরা যদি বহিষ্কৃত হও, আমরা অবশ্যই তোমাদের সঙ্গে দেশত্যাগী হইব এবং আমরা তোমাদের ব্যাপারে কখনও কাহারও কথা মানিব না এবং যদি তোমরা আক্রান্ত হও আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে সাহায্য করিব।’ কিন্তু আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিতেছেন যে, উহারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
৫৯-১২ : বস্তুত উহারা বহিষ্কৃত হইলে মুনাফিকগণ তাহাদের সঙ্গে দেশত্যাগ করিবে না এবং উহারা আক্রান্ত হইলে ইহারা উহাদেরকে সাহায্য করিবে না এবং ইহারা সাহায্য করিতে আসিলেও অবশ্যই পৃষ্ঠপ্রদর্শন করিবে ; অতঃপর তাহারা কোন সাহায্যই পাইবে না।
৫৯-১৪ : ইহারা সকলে সংঘবদ্ধভাবেও তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে সমর্থ হইবে না, কিন্তু কেবল সুরক্ষিত জনপদের অভ্যন্তরে অথবা দুর্গ - প্রাচীরের অন্তরালে থাকিয়া; পরস্পরের মধ্যে উহাদের যুদ্ধ প্রচণ্ড। তুমি মনে কর উহারা ঐক্যবদ্ধ, কিন্তু উহাদের মনের মিল নাই; ইহা এইজন্য যে, ইহারা এক নির্বোধ সম্প্রদায়।
৫৯-১৬ : ইহারা শয়তানের মত, সে মানুষকে বলে, ‘কুফরী কর’; অতঃপর যখন সে কুফরী করে তখন সে বলে, ‘তোমার সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নাই, আমি তো জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় করি।’
৫৯-২১ : যদি আমি এই কুরআন পর্বতের উপর অবতীর্ণ করিতাম তবে তুমি উহাকে আল্লাহ্র ভয়ে বিনীত এবং বিদীর্ণ দেখিতে। আমি এই সমস্ত দৃষ্টান্ত বর্ণনা করি মানুষের জন্য, যাহাতে তাহারা চিন্তা করে।
৫৯-২৪ : তিনিই আল্লাহ্, সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, রূপদাতা, তাঁহারই সকল উত্তম নাম। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যাহা কিছু আছে, সমস্তই তাঁহার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।